পর্দার উপকারিতা
মানুষের শারীরিক গঠনে আর পশুর গঠনের মধ্যে মিল আছে। মানুষ খায়, হজম করে, পশু ও ঠিক খায় এবং হজম করে। মানুষ এবং পশুর HEART, LUNG, KIDNY, VAIN, BILE ইত্যাদি আছে। উভয়ই MANAL GROUP ভুক্ত। বলা যায় মানুষ ও পশু সমান না হলেও SIMILAR। এই পর্যায়ে এসে আমরা বলতে পারি মানুষ শ্রেষ্ঠ কেন? উত্তর খুবই সহজ। মানুষের মনুষ্যত্ব আছে, আর পশুর আছে পশ্যুত্ব। অন্যদিকে মানুষ দ্বিবিধ সত্ত্বা। পশু কিন্তু তা নয়। ANIMALITY ও RATIONALITY.মানুষের মধ্যে যে, পশুত্ব বিরাজ করে তা যদি CONTROL করতে ব্যর্থ হয় তাহলে মানুষের মনুষ্যত্ব বলতে আর কিছু থাকে না। যৌন চাহিদা মানুষের অন্যতম চাহিদা, আবার পশুর ভিতর ও এ চাহিদা বিদ্যমান তা SEASONAL বা মানুষের মত এতটা নয়। মানুষের পশুত্ব যদি মনুষ্যত্বকে ছাড়িয়ে যায় তবে তা আর সীমার মধ্যে থাকে না। তখন সৃষ্টির সেরা মানুষ হয়ে যায় পশুর চেয়েও অদম আমরা অনেক সময় মানুষকে পশুর সাথে তুলনা করে থাকি। কিন্তু আজ কেউ বলতে পারবে না পশু তার স্বাভাবিক নিয়ম অতিক্রম করছে। কিন্তু মানুষের বেলায় তা বলা যাবে না, তাহলে আমরা কেন মানুষকে পশুর সাথে তুলনা করব?
পুরুষ ও নারী এই পৃথিবীর বা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এরা মানুষ হলে ও পরস্পর বিরোধী দেহাবয়ব, আকার, আকৃতি, শক্তি ও যোগ্যতা একই আবহাওয়ায় বেড়ে উঠলে ও মনস্তাত্বিক দিক দিয়ে এদের বিশাল পার্থক্য আছে। SEX বা GENDER পার্থক্য অন্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ফরাসী চিন্তাবিদ আলেকসিস ক্যারেল বলেছেন, পুরুষ এবং নারীর মধ্যে যে পার্থক্য তা মৌলিক পর্যায়েরতাদের দেহের শিরা, উপশিরা স্নায়ু সব কিছু ভিন্ন রূপ বলেই এত পার্থক্য। বাহ্যত দৃস্টিতে এক হলেও আসলে এক নয়। সুতরাং বলা যায় প্রত্যেকেই আপন বৈশিষ্ট্য নিয়ে নিজের জায়গায় অবস্থান করছে। আর এটাইপ্রকৃতির দাবী, আর দাবী যখন অতিক্রম করা হবে তখনই সমস্যা। আমরা আজ প্রশ্ন তুলেছি পুরুষ শ্রেষ্ঠ না নারী শ্রেষ্ঠ অথচ এ প্রশ্নের দরকার নেই। কারণ এটি একটি অবান্তর প্রশ্ন। যেমন অবান্তর প্রশ্ন একজন ডাক্তার শ্রেষ্ঠ না একজন ইঞ্জিনিয়ার শ্রেষ্ঠ। আসলে একজনকে দিয়ে আর একজনের কাজ হয় না। যার যার অবস্থানে সেই বিশেষজ্ঞ। উভয় মিলেই সমাজ গঠিত হয়। এরা একে অপরের পরিপূরক ও মুখাপেক্ষী। এই মুখাপেক্ষীতা যৌন, সামাজিক, মনস্তাত্বিক সব দিক দিয়ে। এই মুখাপেক্ষীতা যখন ভারসাম্যহীন হয় তখন সমাজ সবার্ত্নক ভাবে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। এদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে আছে নির্দেশ। এটি যখন লংঘন হবে তখন অশান্তির অনলে জ্বলবে সমাজ। নারীকে এবং পুরুষকে একে অপরের নিকট হতে আলাদা করা মূর্খদেরই কাজ। পানি অস্তিত্ব নির্ভর করছে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের মিলনের উপর, তেমনি সমাজের অস্তিত্ব নির্ভর করছে নারী এবং পুরুষের উপর। কাউকে বাদ দিয়ে সুষ্ঠ সমাজ আশা করা যায় না।
আল্লাহ তায়ালা আলাদা বৈশিস্ট দিয়ে তৈরীর কারণ এদের একেক শ্রেণীকে দিয়ে একেক প্রকার কাজ সম্পাদন করার পরিকল্পণা নিয়েছেন। তাই এদের দায়িত্ব পালনও ভিন্নতর। অবশই এই ভিন্নতা মৌলিক পর্যায়ের, আজ কাল মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে কোন অংশে পিছিয়ে নেই। ডাক্তার, উকিল, মেজিষ্ট্রেড ছেলেরা যেমন আছে, মেয়েরা ও তেমন। কিন্তু এত সবের পরও আজ বৈষম্য আর সমান অধিকার নিয়ে বাড়া বাড়ি চলছে। এটা আদৗ সম্ভব নয় যে, সমান অধিকার হবে, তার কারণ প্রকৃতিই এভাবে তৈরী করেছে। যেমন প্রথম সন্তান স্ত্রী ধারণ করল আর দ্বিতীয় সন্তান স্বামী ধারণ করবে। এটা কি আদৌ সম্ভব না। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন প্রতিটি বস্তু সৃষ্টি করে আমি যার যার পথ নির্দেশ করেছি। সুতরাং এছাড়া ভিন্ন পথ, অনুরণ তোমাদের জন্য শান্তি দায়ক নয়। এখন আমরা আল্লাহর দেয়া নির্দেশিত পথ ছেড়ে মূর্খের ন্যায় ভিন্ন পথে শান্তির জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। অথচ সৃষ্টিকর্তা তার পথ ছাড়া দ্বিতীয় কোন পথে শান্তি আর মুক্তি নির্ধারণ করেনি। তাহলে আমরা কোথায় খুঁজে পাবো সেই পথ আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তোমাদের কাছে যদি আমার বিধান আর এই পৃথিবী ভালো না লাগে তাহলে এই পৃথিবী তোমরা ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাও। কিন্তু মানুষ তা কি পেরেছে? পারেনি পারবেও না। আল্লাহ আমাদের বসবাস এর জন্য উপযোগী করে বানিয়েছেনেএই পৃথিবী। মানুষতো তার সাড়ে তিন হাত বড়ির খবরই জানে না। সেখানে সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিতে খুঁত সন্ধান করো কেন?
আজ সারা পৃথিবীতে যে, দুটি শ্রেণী লাঞ্চিত তার একটা হচ্ছে নারী অপরটি হচ্ছে মুসলমান। একটি যেন অপরটির পরিপূরক। আজকে সারা বিশ্বে নারী মুক্তি, নারী অধিকার আদায়ের নামে চলছে আন্দোলন, পালিত হচ্ছে জাতিসংঘের উদ্যোগে প্রতি বছর বিশ্ব নারী দিবস। কিন্তু নারী কি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার সঠিক মর্যাদায়? না হয়নি। বরং ঘটেছে তার উল্টো। নারী অধিকারের নামে নারীকে ময়দানে নামীয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে পরিবার ব্যবস্থাকে। পুরুষের সাথে কাঁধে কাধ মিলিয়ে চলার বিনিময়ে তারা হচ্ছে লালসার শিকার। ধর্ষণ, হত্যা, এসিডে ঝলসে দেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন পত্রিকার পাতা খুললেই লোমর্হষক গঠনা ঘটেছে দেশের কোথাও না কোথাও। শুধু বাহিরের লোক নয় নিজের লোকের হাতে ও ঘটছে অহরও ঘটনা, স্বামীর হাতে স্ত্রী, গৃহকর্তার হাতে পরিচারিকা, দুলাভাইয়ের হাতে শ্যালিকা দেবরের হাতে ভাবী হচ্ছে লাঞ্চিত। অনেকেই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করছে পুরুষ শাসিত সমাজ ব্যবস্থাকে।আবার কেউ সামাজিক বীতি নীতিকে অনেকে আবার মেয়েদের হীনমন্যতাবোধ বা পশ্চাদ পদ অবস্থাকে দায়ী করেন।কিন্তু আসলে প্রকৃতভাবে নারীর এই অবস্থার জন্য দায়ী কে? আমরা বলি এই অবস্থার জন্য দায়ী ইসলাম হীনতা হয়তো আমাদের এ মতের সাথে একমত নাও হতে পারেন। আধুনিকবাদী, প্রগতিবাদী, নারীবাদী, মুক্ত বুদ্ধি আর মুক্ত চিন্তার অধিকারী এবং অন্যান্য মতবাদের যারা ধ্বজ্জাধারী এবং এজেন্ট তারা দায়ী করছে ইসলামকে। এটা ইসলাম বিরোধীদের অপপ্রচারের ছাড়া আর কিছুই নয়। যেই পাশচাত্য জগত নারী অধিকার আর মুক্তির কথা বলে তাদের দ্বারা নারী সমাজ লাঞ্চিত হচ্ছে আর বেশী। বিশ্ব সভ্যতার কথিত মডেল আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন মনিকা লিউটনক্সির উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনা সারা পৃথিবীর মিড়িয়া জগতে আলোচনার ঝড় উঠেছিল। তাহলে তাদের মুখে কি করে নারী মুক্তির কথা মানায়? মার্কিন মুলুকে প্রগতির নমুনা শতকরা ষাটভাগ মহিলা আইনজীবি কর্মক্ষেত্রে যৌন নিপিডনের শিকার। এ ধরনের হাজারো ঘটনা সংঘটিত হয়েছে এবং হচ্ছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি আজকের নারী সমাজের এ করুন অবস্থার জন্য যে, বেপর্দা, হোয়াপনা, উচছুখলতা, আকাশ সংস্কৃতি, উলংগপনা ও নগ্ন সংস্কৃতি আজকে রাস্তার ধারে ধারে গড়ে উঠেছে বিউটি পার্লার যেখানে নারীদেরকে সাজানো হয় কমনীয় মোহনীয় করে। নারীরাও নিজেদেরকে মেলে ধরেছে। এমনি মুহুর্তে সমাজ থেকে মনুষ্যত্ব ও নৈতিকতা বিধায় নিতে চলেছে। এর থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হলোইসলামের দিকে ফিরে আসা। এছাড়া বিকল্প কোন ব্যবস্থা পথ নেই। সুতরাং নারীর জন্য পর্দার বিকল্প নেই, অথচ এই সম্পর্কে আমাদের কোন সম্যক ধারণা বা জ্ঞান নেই।
একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও সুন্দর সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য বিশ্ব সষ্ট্রার পক্ষ থেকে আসা বিধান পর্দার প্রকৃত রূপ আমরা জানি না। কেউ মনে করে শুধু ঘরে বসে থাকাটাই পর্দা, আবার কেউ সর্বাঙ্গ কাপড় ,ছোপড়ে ঢেকে রাখাই পর্দা মনে করেছেন। অন্যদিকে আর একদল মনে করে মনের পর্দাই আসল পর্দা হিসেবে ধরে নিয়েছেন। বস্তুত উভয় চরম ভ্রান্তিতে আছেন আল্লাহ নারী, পুরুষকে এমন ভাবে তৈরী করেছেন যে, এরা এক অন্যের প্রতি আর্কষিত। আকর্ষণ হওয়ার প্রচন্ড ক্ষমতা দিয়ে এদের সৃষ্টি করেছেন। বিশেষ করে নারীকে এমন করে সৃষ্টি করেছেন তাদের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কমনীয় এবং মনোমুগদ্ধরূপ। স্বভাবতই পুরুষ এর দৃষ্টি সেদিকেই আকৃষ্ট হয়। সেখানে মনের পর্দা রক্ষা হয় কিভাবে? মানুষ তো আর জড় পদার্থ নয় যে, তাদের কোন অনুভূতি নেই। সুতরাং কামনা বাসনা উদ্রেককারী রসদ থাকতে এরা নির্লিপ্ত থাকবে কিভাবে। তাই আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,`হে নবী মুমিন পুরুষদেরকে আপনি বলে দিন তারা যেন, নিজেদের চোখকে বাঁচিয়ে চলে, এবং নিজেদেরে লজ্জাস্থান সমুহকে হেফাজত করে। এটা তাদের পক্ষে পবিত্রতম নীতি, যা তারা করে সে বিষয়েআল্লাহ পুরোপুরি অবহিত। আর হে নবী মুমিন স্ত্রী লোকদের বলুন তারা যেন তাদের চোখকে বাঁচিয়ে রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থান সমুহের হেফাজত করে‘ (সুরা নুর 30-31) এখানে দেখা যাচ্ছে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন নিজের দৃষ্টিকে হেফাজত করার জন্য অর্থাৎ অবনমিত করার জন্য। তাহলে মনের পর্দা দিয়ে কিভাবে মান বেঁচে থাকবে? অথচ আল্লাহ চান চোখের পর্দা অন্যদিকে এখানে আর ও একটা বিষয়ের অবতারণা করতে হয়, আর তাহলো পর্দা শুধু নারীর জন্য নয়, পর্দা পুরুষকে ও করতে হবে। উল্লেখিত আয়াত দ্বারা তা আমাদের নিকট সুস্পষ্ট। এক্ষেত্রে পুরুষদের শৈথিল্য মনোভাব দেখনোর কোন সুযোগ নেই। অনেকে মনে করেন পর্দা নারীরা পালন করবে পুরুষ নয়, এই চিন্তাধারা আল্লাহর বিদানের সাথে সাংঘর্ষিক। সুতরাং উভয়ের জন্য পর্দা পালন অবশ্যই ফরজ। সুতরাং পর্দার প্রথম কথাই হলো দৃষ্টিকে সংঘত করা। হযরত জাবের (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন হঠাৎ যদি দৃষ্টি পড়ে তাহলে তক করবো? নবী করীম (স:) বললেন তৎক্ষনাৎ দৃষ্টি ফিরিয়ে নাও। দৃষ্টি সংরক্ষণ এত সহজ কাজ নয়। সুতরাং সাজ, গোজ যেটা দ্বারা নজর কাড়ে তা আমাদেরকে এড়িয়ে চলতে হবে। আমরা প্রকৃতিগত ভাবে এক অপরের প্রতি এমনিতেই দুর্বল। তাহলে সেখানে অন্যের চোখে ভালো লাগানোর প্রচেষ্টা সফল হবেই। এই সৌন্দর্য প্রদর্শনের ইচ্ছা ও দৃষ্টির কুফলের একটা কারণ। এর জন্যকোন আইন প্রনয়ন করা যায় না এটা সম্পূর্ণ বিবেকের উপর, এ জন্য নিজেদেরকে সংঘত রাখতে হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَىٰ ۖ وَأَقِمْنَ الصَّلَاةَ وَآتِينَ الزَّكَاةَ وَأَطِعْنَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ ۚ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا ‘পূর্বতন জাহেলী যুগের ন্যায় তোমরা সৌন্দর্য প্রদর্শন করে বেড়িও নন’ (সুরা আহযাব 33)
ইসলাম মানুষের লজ্জা, শরমের যে, সঠিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন পৃথিবীর ইতিহাসে তা বিরল। আজকাল পৃথিবীর সুসভ্য জাতীগুলোর দিকে লক্ষ্য করলে দেখতে পাই তারা সৌন্দর্যের জন্য বেশভূষা পরিধান করে, সতরের জন্যনয়। এমনি কি পশু প্রবৃত্তি চরিতার্থের জন্য সম্পূর্ন উলঙ্গ হতে ও তাদের বাধে না। শুধু ব্যক্তি নয় COLLEETIVELY তারা পশুত্ব উপভোগ করে। পোশাক সম্পর্কে কোরআনে বলা হয়েছে,‘হে আদম সন্তান!আমরা তোমাদের জন্য পোশাক নাজিল করেছি যেন তোমাদের দেহের লজ্জাস্থানগুলো ঢাকতে পারো। এটা তোমাদের জন্য দেহের বাচ্ছাদন ও শোভাবধনের উপায়, আর সর্বোত্তম পোশাক হলো তাকওয়ার পোশাক’। (সুরা আরাফ 26) অথচ এখন আর সতরের উদ্দেশ্য নয় রূপ প্রর্দশের উদ্দেশ্য পড়া হয় যে, পোশাক দৃষ্টিকে সংযত করার কথা সে পোশাক উত্তেজনা বৃদ্ধিতে সহায়ক। তাহলে এই পোশাকের মূল্য কোথায়। সুতরাং এই মানসিকতার পরিবর্তন হওয়া চাই। নতুবা ধ্বংসের অতল গহবরে নিমজ্জিত হতে হবে। কুরআনে বলা হয়েছে, وَالْبَلَدُ الطَّيِّبُ يَخْرُجُ نَبَاتُهُ بِإِذْنِ رَبِّهِ ۖ وَالَّذِي خَبُثَ لَا يَخْرُجُ إِلَّا نَكِدًا ۚ كَذَٰلِكَ نُصَرِّفُ الْآيَاتِ لِقَوْمٍ يَشْكُرُونَ ‘তোমরা নারীদের কাছ থেকে যখন কিছু চাইবে তখন পর্দার আড়াল হইতে চাইবে, এতে তোমাদের এবং তাদের মনের জন্য অধিকতর পবিত্রতা রয়েছে’। (সুরা আহযাব 58) আমাদেরকে জীবনের এবং সমাজের স্থিতিশীলতার জন্য এই নিয়ম কানুন মানতে হবে। নিজেদের তৈরী করা বিদানের এবং মন গড়া কথার অনুসরণে সফলতা এবং শান্তি আসবে না। শান্তি আর সফলতা কিসে আসবে আল্লাহ তায়ালা তা বলে দিয়েছেন, وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ‘আর হে নবী মুমিন স্ত্রী লোকদের বলে দিন যেন তারা নিজেদের চোখকে বাঁচিয়ে রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানকে হেফাজত করে। ও নিজেদের সাজ, গোজ না দেখায়, কেবল সেইসব জিনিস ছাড়া যা আপনা আপনি থেকেই প্রকাশ হয়ে পড়ে এবং নিজেদের বুকের উপর ওড়না ফেলে রাখে। (সুরা নূর-31) অন্যত্র সুরা মুমিমুনের প্রথম 11 আয়াতে আল্লাহ তায়ালা মানুষের সফলতার আর শান্তি কিসে তা সুন্দর ভাবে উল্লেখ করেছেন। নিশ্চিত কল্যাণ লাভ করেছে ঈমানদার লোকেরা যারা নিজেদের নামাযে ভীতি ও বিণয় অবলম্বন করে, যারা বেহুদা কাজ থেকে দুরে থাকে। (সুরা মুমিনূন) তাহলে আমাদেরকে চোখ আর লজ্জাস্থানের হেফাজত করতে এবং রূপ সৌন্দর্য প্রদর্শন করা যাবে না। এটা পর্দার মুলকথা। আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে যত পাপ কাজ সংঘটিত হয়েছে তা প্রথম চোখের সাহায্যেই হয়েছে। চোখ নির্দোষ ভাবেই দেখে। নফস দেখর পক্ষে তাকে ভালো যুক্তি দেখায়। সৌন্দর্য আস্বাদনে দোষ কোথায়? কিন্তু এর মাঝে শয়তান আনন্দ সম্ভোগের আকাংখা বাড়িয়ে দেয়, আর তা শেষ পর্যন্ত মিলন কামনায় পৌঁছায়। একটা ফুল দেখে মনের যে, অবস্থা সৃষ্টি হয়। কিন্তু এক সুসজ্জিত সুন্দরী নারী দেখলে মনের সে পবিত্র ভাব আর থাকে না। ইসলাম মানুষের প্রকৃতির দিকেই লক্স্য রেখে বিদান দিয়েছেন। আর তা হলো নারীকে পেতে বিয়ের মাধ্যমে হালাল করে। এই পদ্ধতিই হবে আমাদের জন্য সর্বাধিক কল্যান কর এবং ভারসাম্যপূর্ণ। প্রাকৃতিক নিয়মকে লংঘন করে অত্যধিক সংযম প্রদর্শন করলে যেমন মনের লামপট্য বা চিন্তার অনিষ্ট তেকে রক্ষা পাওয়া যায় না, তেমনি বাধাবন্ধহীন জীবন যাপন করলেও তার কুফল থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব হবে না।পরিশেষে আমাদেরকে মনে রাখতে হবে যে, ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান ISLAM IS THE COMPLET CODE OF LIFE. এর যে কোন নিয়ম পদ্ধতি থেকে সঠিক সুফল লাভ করতে হলে ইসলামের গোটা জীবন বিধানকেই প্রতিষ্ঠিত রাখতে হবে। আমাদের এই জীবন খুবই সংক্ষিপ্ত। তাই গতানুগতিক ভাবে এবং স্বাভাবিক নিয়ম পদ্ধতির আলোকে জীবন অতিবাহিত করতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। সেই জায়গায় আমরা বাড়তি ঝামেলা ভোগ করার আমাদের সময় কোথায়। ক্ষণস্থায় জীবনে আমরা যদি মনুষ্য শয়তান কর্তৃক সুষ্ট সমস্যা মোকাবিলা করতেই ব্যতিব্যস্ত থাকি তাহলে আমরা বাকী কাজ কবে সমাধা করবো। আর কখন সফলতা পাবো। এভাবেই যদি চলতে থাকে তাহলে আমাদের সামাজিক, নৈতিক অবস্থা হবে বিধ্বস্ত আর বিপর্যস্ত। আর এই পরিনতি আমাদের পক্ষে ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তাই এ কথা সন্দেহাতীত ভাবে বলা যায় উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে পর্দা প্রগতির অন্তরায় তো নয়ই বরং পর্দা নারীর সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন