বিশ্বের একটি মাত্র হিন্দুত্ববাদ দেশ ভারত। জনসংখ্যা ও ভৌগলিক আয়তনে ভারত একটি বিশাল দেশ। প্রত্যেক সভ্যতার মধ্যে কিছু না কিছু সংঘাত ঘটে থাকে। ভারতের গুজরাট রাজ্যে ট্রেনে আগুন লাগাকেকেন্দ্র কের হাজার হাজার নিরিহ মুসলমানদের মনুষ্য বিবর্জিত ভাবে পুড়িয়ে যে ভাবে হত্যা করা হয়েছে তা সভ্যতা বিরোধী ও মানবতার গন্ডদেশে চপেটাঘাত। কিন্তু ভারত সরকার মঞ্চে যে, নিকৃষ্টতম কুশীলব করেছে তা ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া যায় না। হয়তো আর পাওয়াও যাবে না। মুসলিম যুবতি মেয়েদের ধর্ষণ এবং ধর্ষণের পর অমানুষিক যন্ত্রনা দিয়ে হত্যাক করা হয়েছে। অন্ত:সত্বা মহিলার পেটকেটে মাসহ বাচ্চাকে আগুনে পুড়িয়ে মারার যে লোমহর্ষক নৃশংসতা চালিয়েছে তা মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় সৃষ্টি করেছে। উগ্র হিন্দুদের এ বরর্বতা আইয়ামে জাহেলিয়াতকে শুধু হারই মানায়নি বরং নয়া মাত্রা যোগ করেছে। এই হত্যাযক্ত শাসক শ্রেনীর পৃষ্ট পোষকতায় আর রাষ্ট্রীয় ইউনির্ফম পরা রক্ষকদের সহযোগিতায় সংঘটিত হয়েছে। ভারত সরকার নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য একটি আশ্রয় কেন্দ্র পর্যন্ত খোলেনি এবং সাহায্যও করেনি।
গুজরাটের দেয়ালে দেয়ালে হিন্দি ও ইংরেজী ভাষায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে অনেক অশালীন কথা লিখা হয়েছে। ভরতের বিশেষ কয়েকটি গুরুপূর্ণ স্থানের দেয়ালে ইংরেজীতে লেখা ছিল Come Learn us how to born the Muslim যার অর্থ দাঁড়ায় এসো শিখে যাও কিভাবে মুসলমানদের পুড়িয়ে মারতে হয়। এত সব কিছুর পরও ভারত সরকার মুসলমানদের রক্ষায় এগিয়ে আসেনি। বরং ভারতের তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী অটল বিহারী বাজপায়ী বলছে এটা কোন দাঙ্গা নয়, বরং যেখানেই মুসলমান সেখানে নাকি এধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। এধরনের বক্তব্য দায়িত্বহীনতা ও নিলজ্জ মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। নিরীহ নিরপরাধ মানুষের রক্ত পানের জন্য ক্ষুর্ধাত্ব ও তৃঞ্চার্ত হয়ে পড়েছে উগ্র হিন্দুরা তা ইতিপূর্বে আর কখনো দেখা যায়নি।
বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রদান দেশ। তার পর ও এদেশে বিপুল সংখ্যাক সংখ্যা লঘুর হিন্দুর বসবাস। এখানে দীর্ঘ কাল ধরে কোনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হচ্ছে না বা হয় না । ভারত সরকার এবং ভারতীয় কিছু সংবাদ মাধ্যম ও মিডিয়ার একটি নিত্য প্রিয় অভিযোগ হলো বাংলাদেশে অসম্ভব রকম সংখ্যালঘু নির্যাতন চলছে। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় আমাদের কিছু নিজস্ব বুদ্ধিজীবী এবং সংবাদ পত্রের গভীরতম বিশ্বাস যে, ভারতে যা কিছুই ঘটে তা-ই ধর্ম নিরপেক্ষ প্রগতিশীল এবং সংস্কৃতির সুষমামন্ডিত। অথচ প্রকৃত অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন বিপরীত। সংখ্যালঘুরা এখানে শুধু মুখো ও নিরাপদে নেই সংখ্যা গবিষ্টদ্রের তুলনায় তাদের অবস্থাও অবস্থান বহুগুনে প্রীতিকর ও সম্মানজনক ও বটে। কিন্তু কে বোঝাবে যে বাংলাদেশে কোন নরেন্দ্রমোদী ও আদভানী বা তথাগত রায়ের মত কেউ নেই। আমাদের সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউ ইর্য়কের একটি সমাবেশে বাধ্য ও বিরক্ত হয়ে বলেছিলেন হিন্দুদের এক পা বাংলাদেশ আরেক পা ভারতে।
বর্তমানে ভারত নতুন খেলায় মেতে উঠেছে যে, দু’কোটি বাংলাদেশী মুসলমান ভারতে আছে। আসলে ভারতীয়দের এ দাবী অতিশয় গাঁজা খোরি বটে। বাংলাদেশী মুসলামন ভারতে আছে বলে তাদেরকে বাংলাদেশে পুশব্যাকের যে, নিলর্জ্জ্য কর্মকান্ড শুরু করেছে তা সভ্যতা বিরোধী এবং মানবতা ও মানবাদিকারের স্পষ্ট লংঘন। ভারত আসলে অত্যাচর করে খুব আনন্দ পায়। ভারতের মধ্যে প্রতিহিংসা ও পরশ্রীকাতরতা স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশী। সহিংসতার মধ্য দিয়ে মানুষের প্রতি মানুষের অবজ্ঞা ও নিগৃহকে ধর্মীয় রুপদান করার ফলে অত্যাচারকে ভারত একটি ধর্মীয় কর্তব্য বলে জ্ঞান করে। আসলে ভারত মানবিক অধিকার কে পদদলিত করাই ভারত বর্ষের নৈতিক ও ধর্মীয় কর্তব্য বলে মনে করে। ভারত সব সময় বিশ্বাস করে আক্রমনই হলো আতরক্ষার প্রকৃষ্টতম পথ। এজন্যেই ভারতেরই জমিনে ভারতের প্রত্যক্ষ মদদে বঙ্গভূমি ওয়ালারা অফিস খুলে ফোন ফ্যাক্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিরোধী নানাবিধ অপতৎপরজ প্রকাশ্যে ও সরবে অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও এই অভিযোগ যাতে কোন ভাবেই উত্থাপিত হতে না পারে সেই হেতু ভারত আগে ভাগেই এই অলীক ও অবাস্তব অভিযোগ তীব্র নিনাদে হামেশাই উত্থাপন করে চলছে।
যে বাংলাদেশে তিন শতাধিক ভারত বিরোধী জঙ্গী শিবির বর্তমান আসলে ভারত সৎ ও নিরীহ প্রতিবেশিকে উত্ত্যক্ত করে একধরনের আনন্দ পাওয়া ভারতের একটি নেশায় পরিনত হয়েছে। অথচ বাংলাদেশী সন্ত্রাসীরা যখন ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেয় এবং সেখান থেকে পরিকল্পনা মাফিক বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মবান্ড চালায় আর বাংলাদেশ সরকার যখন এদের ফেরত চায় তখন কিন্তু ভারতীয় শাসক গোষ্টি এ সন্ত্রাসীদের ফেরত তো দেয়না বরং ভারতের মাটিতে অবাদ চলা চলের সুযোগ করে দেয়। বাংলাদেশ যে ভারতকে কত ভালোবাসে একাত্তরের পূর্বাপর সময়ের মধ্যে সেই সাক্ষ্য বিধৃত হয়ে আছে। সেই ভালোবাসার সুযোগ নিয়ে সাত দফা চুক্তি স্বাক্ষার ভারত বাধ্য করলো শোনা যায় চুক্তি স্বাক্ষারের পর অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজরুল ইসলাম দুঃখে আতঙ্কে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেছিলেন। চুক্তিতে ছিল বাংলাদেশের কোন সেনা বাহিনী থাকবে না। মুক্তি যুদ্ধে প্রত্যক অংশ গ্রহন না করা সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে ভারতীয়দের দ্বারা শুন্যপদ সমুহু পূরণ করতে হবে। পররাষ্ট্র নীতি প্রণীত হবে ভারতের অভিপ্রায় ক্রমে এই ধরনের অপমানকর শর্ত। এই হলো বাংলাদেশের প্রতি বারতের ভালোবাসার নমুনা। ভালোবাসা যদি বিনাশ প্রাপ্তির পথকে সুগম করে তোলে তখন সেই ভালোবাসার কি আর সেই ভালোবাসা তাকে। ইংরেজ কবি বলেন- Friendship may grow in to love but love never sub moles in to Friendship বন্ধুত্ব থেকে ভালোবাসা গড়ে উঠে। কিন্তু ভালোবাসা থেকে আর বন্ধুত্বে পিরে যাওয়া যায় না। অর্থাৎ ভালোবাসা ভেঙ্গে গেলে যা হয় তাহলো অনিবার্য অসূয়া অনিবার্য বিবমিষ। বাংলাদেশ ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বেরুবাড়ির সঙ্গো তিনবিঘা করিডোর এর বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো বেরুবাড়ি পরদিনই ভারতের হাতে তুলে দিরাম কিন্তু তিন বিঘার ক্ষুদ্র করিডোটি ভারত আজ ও নিজের করে রেখে দিল। ভারতের সাথে বাংলাদেশের পানি সমস্যা নিয়ে যে অবস্থা তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। পাকিস্তানের সাথে ভারতের পানি চুক্তি বর্তমান আছে। সেখানে ভারত কোন রুপ উক্ত্যক্ত করার সাহস পায় না। তার কারণ পানি চুক্তি নিয়ে ভারত যখন কিছুটা গড়িমসি করছিল পাকিস্তান তখন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জাতিসংঘের বিশাল বহু জাতিক সমাবেশে জানিয়ে দিল জ্বলাভাবে দিনে দিনে ধ্বংস প্রাপ্তির চেয়ে পাকিস্তানের জওয়ান ও জনগন যুদ্ধের ময়দানে শাহাদাত বরণ শ্রেয় জ্ঞান করে। কিন্তু আমরা বতা এধরনের শক্ত কথা বলার সাহস রাখিনা। (দৈনিক ইনকিলাব ২৬ নভেম্বর ২০০৪) উপনম্পাদকীয়।
বাংলাদেশের মানুষ ভারতকে বন্দু হিসেবে দেখতে চায়। চায় শুধু সুহ্নদয় রুপে সহযোগী হিসাবে। চায়না শুধু অভিভাবক রুপে। ভারত সরকার বাংলাদেশের এই অভিপ্রায়কে সঠিক ভাবে অনুধাবন করতে সক্ষম নয় বলেই ভারত পুশু ব্যাকের মতো জগন্যতম কাজ করছে। বাংলাদেশ অনুসরণ করতে চায় আত্নমর্যাদর পথ, রচনা করতে চায় সম সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে রাষ্ট্রের সম্মান ও পারস্পরিক সর্ম্পক। বাংলাদেশ চায় অভ্যন্তরীন ক্ষেত্রে আত্নবিশ্বাসের পথ রচনা করতে চায় স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতি সুচনা করতে।
প্রতিটি ভারতীয় সাম্প্রদায়িক হিন্দুর মনে কুৎসিত মানসিকতা বিরাজমান। যার প্রমাণ আদভানীর পুশব্যাকের ঘোষণা। বাংলাদেশ বেড়ে উঠুক বা সমৃদ্ধ হোক বা দেশটিতে সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় গড়ে উঠুক সেটি ভারতীয় হিন্দু নেতৃবৃন্দ চায় না। আর চায় না বলে ভারতীয় বংশোদ্ভুত মুসলমানকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়ে বাংলাদেশের‘র' রাজনীতিতে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পায়তারা শুরু করে দিয়েছে। ভারতকে মনে রাখা উচিত বাংলাদেশ কাশ্মীর কিংবা সিকিম ভূটান নয় এটি ১৮ কোটি ঈমানদার দ্বিনদার দেশ প্রেমিক মুসলমানের দেশ, যারা এক আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় করে না। এদেশে আদভানীর মতো দৃষ্ট চক্রের কাউকে মিথ্যা কল্প কাহিনী দিয়ে পুশব্যাকের হুমকি দিয়ে বাংলাদেশের ঘরে আগুন লাগানোর যে, চেষ্টা চালাচ্ছেন সে আগুনে ভারতীয় নেতৃবৃন্দ যে, পুড়ে ছাই হয়ে যাবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। এ সহজ সত্যটি আদভানীর স্বরণ রাখা উচিত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন