নাট্য ব্যক্তিত্ব ও রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সানজিদা খাতুন মৃত্যু হলে ছায়ানটে রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীদের গীত পরিবেশন করা হয়েছে। যা মুসলিম জাতির জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়। এই দৃশ্য দেখে দেশের মানুষ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। সানজিদা খাতুনের মৃত্যুতে ছায়ানটের অনুসারীরা যথেষ্ট কান্নাকাটি করেছে।
সানজিদা খাতুন ৬০ দশকে রমনার বটমূলে রবীন্দ্র কনসার্ট সাংস্কৃতিক অন্যতম সংগঠক। তখনকার সময়ে পাকিস্তানী শাসকদের বিরুদ্ধে বাঙ্গালীর আত্মপরিচয় তুলে ধরেন। যার কারণে তিনি আওয়ামী লীগ, বাম রাজনীতিতে সমাদৃত ছিলেন।
যারা ইসলামী রাজনীতি করেন এবং বাঙ্গালি মুসলিম মাননকে অগ্রগণ্য মনে করেন। তারা ছায়ানটকে মুসলিমের প্রতিপক্ষ মনে করে। ছায়ানটের ধারক বাহকদের বেশভূষা, কপালে বড় লাল তিলক, হাতাছাড়া ব্লাউজ, খদ্দের পাঞ্জাবি, কাঁদে চটের ব্যাগ, সিগারেট পান করে ধোঁয়া সামনের দিকে পুকে দেয়া, ওড়না ছাড়া চলাফেরা এই সকল কারণে তাদের প্রতি তির্যক মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে ছায়ানট কর্মীরা মুসলিমদের বেশভুষা যেমন দাড়ি-টুপি, পাগড়ি, প্যান্ট- পাজামা টাখনুর ওপর, মেয়েদের হিজাব নিয়ে তাচ্ছিল্যজনক মন্তব্য করে থাকে। এক পক্ষ বলছে দেশটা ভারতের করতলে অন্যপক্ষ বলছে দেশটা আফগানিস্তান হয়ে গেছে।
বাংলাদেশের সংস্কৃতির দুই ধারা চলমান। একটি হলো ছায়ানট অন্যটি হলো ইসলামী।
বাম ধারার রাজনীতিকরা ছায়ানট সাংস্কৃতির জোরালো সমর্থক। তারা রবীন্দ্র সংস্কৃতিকে নিয়ে বেশ যত্নশীল। ছায়ানট সংস্কৃতির জগতে মুসলিম সংস্কৃতিকে কটাক্ষ করাই ছিল তাদের মুলমন্ত্র। খারাপ চরিত্রের মধ্যে ছায়ানট অযৌক্তিক ও অনাকাংখিত বিতর্ক সৃষ্টি করতে দাঁড়ি টুপি পরিয়ে দিত।
বিগত ৫৪ বছর ধরে দেখে আসছি পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রায় দাড়ি-টুপি চাঁদ-তারকা, শিয়াল, কুকুর, বাঘ, ইসলামী ব্যক্তিত্বকে দানব আকৃতি ও লেজসমেত মুসলিম সংস্কৃতি হিসেবে দেখানো হত।
সানজিদা খাতুন একজন মুসলিম নারী হিসেবে তার মৃত্যুর পর কোরআন খতম, দাফন-কাফন করা ইসলামিক রীতি নীতিতে হওয়ার কথা। কিন্তু ছায়ানট কর্মীরা সানজিদা খাতুনের মৃত লাশেকে ফুল দিয়ে বরণ করা এবং রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করলেন। তাদের কাছে দাফন কাফনের কোন বালাই নাই।
মুসলিম সমাজ বিগত ১৪ শত বছর তাদের চোখের সামনে এ রকম ভিন্ন আকৃতির মৃত্যু পরবর্তী বিদায় দেখেনি। মুক্ত চিন্তা, ব্যক্তিস্বাধীনতা বা প্রগতিশীলতার নামে আমাদের মুসলিম সংস্কৃতিকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
তাই এখন থেকে ঈদে মিলাদুন্নবী, ঈদ মিছিল, পহেলা বৈশাখে রমনার বটমূলে যাওয়া ও ইসলামী সংস্কৃতিক চর্চা তুলে ধরা দুই ঈদে মুসলিম সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা একান্ত আবশ্যক।
পরিশেষ ইসলামী সংস্কৃতির সৌন্দর্য তুলে ধরার মাধ্যমে ছায়ানটে কুরুচিপূর্ণ সংস্কৃতির বিলোপ সাধন করাই মুসলিম সংস্কৃতির অনিবার্য দাবী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন