ইসলাম মানুষের জন্য আল্লাহ তা'য়ালার এক অফুরন্ত নেয়ামত। মানুষের সুখ-দুঃখ,আরাম-আয়েশ, সমাজিক, মানসিক ক্ষেত্রে সহানুভূতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখে। একজন ডাক্তার এর ব্যবহার রোগীর মানসিক শারীরিক ঔষধ পথ্যের চাইতে বেশি কার্যকর। ভালো ডাক্তার চিকিৎসায়ও সাফল্য লাভ করে।
ইসলামে রোগী দেখার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখা উচিত। যেমন, রোগীকে সালাম বিনিময়ের মাধ্যম স্বাগত জানানো, রোগীর সাথে আশাব্যঞ্জক কথা বলা, রোগীক ধৈর্য ধারণে উৎসাহিত করা, জটিল রোগ জেনেও আপনার তেমন কিছু হয়নি বলে রোগীর সাহস যোগানো ইত্যাদি।
রোগীর অধিকার সম্পর্কে সজাগ, সচেতন ও শ্রদ্ধাশীল থাকা বাঞ্ছনীয়। একজন রোগীর সকল ধরনের তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা করা। ডাক্তার, নার্স ও সেবাকর্মী হাসিখুশি একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও দয়াদ্র হওয়া উচিত এ রোগী সম্পর্কে সুধারণা রাখা। যে কোন বয়সের রোগী হোক তাদের প্রতি উত্তম আচরণ করতে হবে। চিকিৎসক নার্স সেবাকর্মী উত্তম ভাষায় কথা বলতে হবে। মন্দ কথা বলা যাবে না। রোগীর সাথে নিভৃতে কথা না বলা। তার সাথে বিনয়ী আচরণ করা। তাছাড়া রোগীর অধিকার খর্ব যেন না হয় সেদিকে নজর রাখা। সর্বাবস্থায় রোগীর রোগ মুক্তির জন্য আল্লাহর নিকট দোয়া করা।
রোগীর গায়ে হাত দেয়ার আগে অনুমতি অত্যাবশ্যক। যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে রোগী অথবা তার নিকট আত্মীয়কে যথাযথ ব্যাখ্যা করা। চিকিৎসার ক্ষেত্রে শতভাগ সফলতা দেয়া ঠিক নয়। সফলতার বিষয়টি মহান আল্লাহ তা'য়ালার উপর ছেড়ে দিতে হবে। রোগীর কথা ও তার চাহিদা মনযোগ সহকারে শুনতে হবে। রোগীর অবস্থা যতই খারাপ হোক না কেন তার মানসিক শক্তি বাড়ে এমন কথা বলা উচিত।
ডাক্তার, রোগী এবং সেবা কর্মী তাদের প্রত্যেকে সতর ঢেকে রাখা আবশ্যক। যদিও চিকিৎসার কারণে এ বিধান শিথিলযোগ্য। তবে খেয়াল রাখা বাঞ্ছনীয় চিকিৎসা এবং পরীক্ষার জন্য যতটুকু সতর উন্মুক্ত রাখা প্রয়োজন তার বেশি যেন না হয়। এ সময় রোগীর নিকট আত্মীয় বা তৃতীয় কোন সেবাকর্মী উপস্থিত থাকা উচিত। রোগীর সতর উন্মোচন করার ক্ষেত্রে লজ্জা ও মানসিক চাপের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখা উচিত। তাছাড়া রোগী শিশু বা বয়স্ক হোক সতর খোলার আগে অনুমতি আবশ্যক।
মেডিকেল কলেজের ছাত্রছাত্রী বা সহপাঠীদের সাথে ব্যাপক মেলামেশা হয়। এ সময় সতর্ক থাকা উচিত যাতে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে না পারে। পোশাকের শালীনতা, কথাবার্তা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অপারেশন থিয়েটরে সামাজিক ভাব বিনিময় অনুসরণ ও মার্জিত পরিবেশ বজায় রাখা। তাছাড়া অপারেশন থিয়েটারে পোশাক মার্জিত হওয়া উচিত।
নারী বা পুরুষ রোগীর মানসিক, শারীরিক, ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা-নীরিক্ষা ও অপারেশন করার ক্ষেত্রে পুরুষের ক্ষেত্রে পুরুষ, নারীর ক্ষেত্রে নারী ডাক্তর বা সেবা কর্মী দিয়ে করা উচিত। তবে প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত ডাক্তার ও নার্সের স্বল্পতার কারণে বিপরীত লিঙ্গের চিকিৎসায় কোন অসুবিধা নাই।
একজন রোগী যখন হাসপাতালে ভর্তি থাকেন, তখন তার আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষী তাকে হাসপাতালে দেখতে আসেন। ইসলামী শরিয়া রোগী দেখাকে উৎসাহিত ও সাওয়াবের কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছে। হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ, ডাক্তার, নার্স ও সেবা কর্মী তাদের সাথে সৎব্যবহার এবং সহানুভূতি দেখাবে।তবে, রোগীর রোগের ধরণ ও রোগীর অবস্হাবেধে ডাক্তার ও সেবাকর্মীর নির্দেশনা মানা উচিত। যাতে রোগী ও আত্মীয় স্বজনের মঙ্গলের জন্য নির্দেশনা মেনে চলা সবার জন্য কল্যাণকর।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন