সাধারণ অর্থে আমাদের নিজেদের ভুলভ্রান্তি নিয়ে চিন্তা বলতে বুঝি সারাদিন যে সব কাজ কর্ম আমরা করে থাকি তার কতটুকু ভালো করলাম বা খারাপ করলাম বা কতটুকু দেশ ও জাতির উন্নতির জন্য করলাম না কতটুকু নিজ প্রতিষ্ঠান জন্য করলাম এর একটা হিসাব নিজেকে প্রশ্ন করে এবং নিজের থেকে এর উত্তর বের করার নাম আত্ম জিজ্ঞাসা আত্মসমালোচনা।
যদি আমাদের ভালোর কাজের চেয়ে খারাপ বেশি হয় তাহলে পরবর্তী দিন যেন ভালো করা যায় বা ভালো কাজ করার চেষ্টার করার নাম হল আত্ম জিজ্ঞাসা বা আত্মসমালোচনা। আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তির আজকের দিন অপেক্ষা আগামী দিন ভালো কাজের মাধ্যমে গেলেও না তার ধ্বংস অনিবার্য।
বিংশ শতাব্দীর এই প্রতিযোগিতার যুগে সারা বিশ্ব প্রযুক্তির স্বর্ণযুগ। আর আমরা এখন হরতাল, অবরোধ, মারা-মারি, চুরি, ডাকতি, রাহাজানী এবং একে অপরকে দোষারোপের মাধ্যমে অতিবাহিত করছি। জাতি হিসাবে আমরা কোথায় অবস্থান করছি তা সকলেরই জানা।
দেশে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ অতি প্রাচীনকাল থেকেই তাদের ঐতিহ্য কৃষ্টি-কালচার নিয়ে বসবাস করে আসছে। সকলের অধিকার এবং স্বাধীন মতামত যে ভাবে সংরক্ষণ হয়, এবং জাতীয় উন্নয়ন হয় এভাবে চিন্তা করেই রচিত হওয়া উচিত ছিল সংবিধান।
কিন্তু আমরা এমন একটি সংবিধান তৈরি করতে পারিনি। তারপরও যেটুকু আমাদের সাংবিধানিক নিয়ম নীতি না মানি তাহলে আমাদের সাংবিধানিক নিয়ম-নীতি অন্যকোন মানার দরকার আছে কি? নিয়ম কানুনের মাধ্যমে চলার জন্যই তো সংবিধান। কিন্তু আমার দেশে যে সব কর্মকান্ড হচ্ছে তা-কি সব নিয়ম কানুন মাফিক হচ্ছে। হচ্ছে না বলেই আমাদের এই অস্থিরতা ও আদর্শিক অবনতি।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আজ আমরা স্বাধীনতা পক্ষ বিপক্ষ নিয়ে টানা টানি করছি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ও বিপক্ষের শক্তি দেশকে দুটি ধারায় বিভক্ত করে রাখছি। বিভক্তির কারণে দেশ যেমন অগ্রগতি উন্নতি বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সর্বোপরি জাতি হিসাবে আমরা বিভক্ত হয়ে পড়েছি।
আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতার জন্য যে ত্যাগ স্বীকার হয়েছে এর প্রতিশ্রদ্ধা জানানোর জন্যই দরকার ঐক্যবদ্ধ ও সুশৃংখল ভাবে চলা। আমাদের স্বরণ রাখতে হবে আমরা একটি সংবিধানের অধিনে। সংবিধান সবার জন্য সমান যেমন তাতীর তেমনি কুলির বামুনের তেমনি সৈয়দ শেখ ভূঁইয়া পাঠান কিংবা মিয়া সাহেবেদের।
দেশের একটি সংবিধান আছে তেমনিভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ও পৃথক গঠনতন্ত্র আছে। সুতরাং কে বড়, কে ছোট দলের এই মন মানসিকতা বাদ দিতে হবে। সকলে যদি তাদের গঠনতন্ত্র অনুস্বরণ করে এবং কে ভালো বা মন্দ তা আত্মসমালোচনা করলেই বুঝা সহজ হবে। আত্ম সমালোচনা বা আত্মজিজ্ঞাসা করতে পারলেই দেশ ও জাতির ভাগ্য পরিবর্তন হতে পারে। যেমন শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার মহানায়ক তেমনিভাবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক। একথা গুলো মেনে নিলেই সকল দলের লক্ষ্য বস্তু একটাই হওয়া উচিত।
গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে অনেক রক্ত ঝরছে অনেক মায়ের কোল খালি হয়েছে। গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়েছে বলেই আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পেরেছেন। দেশের কোটি কোটি জনগণ আজ যাদের মুখের দিকে তাকিয়ে বসে আছে যাদের চোখের ইশারায় ও অঙ্গুলী হেলনে দেশ পরিচালিত হচ্ছে।
হরতাল, ধর্মঘট হচ্ছেি এবং যেভাবে ধরপাকড়, পুলিশি হয়রানী তা দেখে মনে হচ্চে পাক হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে চলে এসেছে। দেশগ্রামে বাড়ি দেখিযে দিচ্ছে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। এর মাধ্যমে বাংলার সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই কালচার কখনো আগে ছিল না। এটা চলতে থাকলে অচিরেই সমাজ ও রাষ্ট্রের ভাঙ্গন সৃষ্টি হবে। তাই সরকারী দলকে অবশ্যই এই নোংরা খেলা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন