মানুষ কমানোর পদ্ধতি - Etikathon

Etikathon

দেশ ও সমাজ : আমার চিন্তার বহি:প্রকাশ

Etikathon

test banner

Post Title

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বুধবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৩

মানুষ কমানোর পদ্ধতি

 পটভূমি


জন্ম নিয়ন্ত্রন Birth Control আন্দোলন আঠার শতকের শেষাংশে ইউরোপে সূচনা হয়। ইংল্যান্ডের অর্থনীতিবিদ ম্যালথাস (Malthus)-এ আন্দোলেনের ভিত্তি রচনা করেন। এ আন্দোলনের উদ্দেশ্য হল বংশ বৃদ্ধি প্রতিরোধ করা। জনসংখ্যা বৃদ্ধির উচ্চহার দেখে মি. ম্যালথাস হিসাব করেন, পৃথিবীতে আবাদযোগ্য জমি ও অর্থনৈতিক উপায়-উপাদান সীমিত। কিন্তু বংশবৃদ্ধির সম্ভাবনা সীমাহীন। 1798 সালে মি. ম্যালথাস রচিত An essay on population and as it effects, the future improvement of the society. (জনসংখ্যা ও সমাজের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে এর প্রভাব) নামক গ্রন্থে সর্বপ্রথম তার মতবাদ প্রচার করেন। এরপর ফ্রান্সিস প্ল্যাস (Francis Place) ফরাসী দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধি প্রতিরোধ করার প্রতি জোর প্রচারণা চালান। কিন্তু তিনি নৈতিক উপায় বাদ দিয়ে ঔষধ ও যন্ত্রাদির সাহায্যে গর্ভানিরোধ করার প্রস্তাব দেন। 1833 সালে আমেরিকার বিখ্যাত ডাক্তার চার্লস নোল্টন (Charles of know ton) এ প্রস্তাব সমর্থন করেন। তিনি তার রচিত The Fruits of philosophy নামক গ্রন্থে সর্বপ্রথম গর্ভনিরোধের চিকিৎসা শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা এবং এর উপকারিতার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।

কিছু দিন এ আন্দোলন বন্ধ থাকার পর 1876 সালে নতুন করে ম্যালথাসীয় আন্দোলন (New Malthusian Movement) নামক নতুন আন্দোলন শুরু হয়। মিসেস এ্যানী বাসন্ত ও চার্লস ব্রাডার ডা: নোল্টন তার গ্রন্থটি 1876 সালে ইংল্যান্ডে প্রকাশ করেন। 1977 সালে ডা: ড্রাইসডেল (Drysdale) এর সভাপিতিত্বে একটি সমিতি গঠিত হয় ও জন্ম নিয়ন্ত্রণের প্রচার কার্য শুরু হয়ে।

1879 সালে মিসেস বাসন্ত এর রচিত Law of population (জনসংখ্যার আইন) নামক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। 1881 সালে হল্যান্ড, বেলজিয়াম, ফ্রান্স ও জার্মানিতে এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে এবং ক্রমশ: ইউরোপ ও আমেরিকাসহ সকল সভ্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানে স্থানে জন্মনিরোধ ক্লিনিক (Birth Control Clinics) খুলে দেয়। (ইসলামের দৃষ্টিতে জন্ম নিয়ন্ত্রন, ঢাক; আধুনিক প্রকাশনী, 92)

আজলের বিধান 

মুসলিম সমাজে জন্ম নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা এ জাতীয় প্রচলন পরিবারের গোটা কাঠোমে ও সমাজ বন্ধনের সমস্ত বিধি-বিধান চুরমান করে গোটা মানব সভ্যতার বিপর্যয় সৃষ্টি করে চলেছে। এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবী ও টাকায় কেনা আলেমরা জন্মনিয়ন্ত্রণের পক্ষে যুক্তি দেখাতে দিয়ে হযরত জাবের (রা:) এর হাদিসকে তারা তুলে ধরেন এবং সে কালের আজল কে জায়েজ মনে করে এ কালের জন্ম নিয়ন্ত্রন Birth Control কে জায়েজ বলতে চান। তারা বলে প্রাচীনকালের ‘আজল’ ছিল সে কালেরই উপযোগী জন্মনিয়ন্ত্রন পন্থা। এ কালের বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় যা করা হচ্ছে ঠিক তাই করা হত সে কালের অবৈজ্ঞানিক উপায়ে। হযরত জাবের (রা:) বলেন, রাসুল (সা:) এর জীবদ্দশায় আমরা‘আজল' করতাম, অথচ তখন কুরআন নাজিল হচ্ছিল। (বুখারী ও মুসলিম) মিশকাত হাদিস 3184

নবী করিম (সা:) আজল সম্পর্কে বলেন, তুমি কি সৃষ্টি করো ? তুমি কি রিযিক দাও ? তাকে তার আসল স্থানেই রাখ, আসল স্থান সঠিকভাবে তাকে থাকতে দাও। কেননা এ ব্যাপারে আল্লাহর চূড়ান্ত ফয়সালা রয়েছ।(বুখারী ও মুসলিম) মিশকাত হাদিস 3186)

এ প্রসঙ্গে হাসান বসরী বলেছেন, আল্লাহর শপথ রাসাল (সা:) এর এ কথায় আজল সম্পর্কে স্পষ্ট ভৎসনা ও হুমকি রয়েছে। (পরিবার ও পারিবারিক জীবন) আবু সাঈদ খুদরী (রা:) বলেন, আমরা রাসূল (সা:) এর সঙ্গে বনী মুস্তালিকের যুদ্ধে বের হয়ে গেলাম। সেখানে কিছু সংখ্যক আরবকে (দাসী) বন্ধী করে নিলাম। তখন আমাদের মধ্যে রমনীদের প্রতি আকর্ষণ জাগে। যৌন ক্ষুধাও তীব্র হয়ে উঠে এবং এ অবস্থায় আজল করাকেই আমরা শ্রেয় মনে করলাম। তখন এ সম্পর্কে নবী করিম (সা:) এর নিকট জিজ্ঞেস করলাম। তিনি জবাবে বললেন, তোমরা যদি তা কর তাতে তোমাদের ক্ষতি কি? কেননা আল্লাহ তায়ালা কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ সৃষ্টি করবেন, তা তিনি নিদিষ্ট করে রেখেছেন এবং তা অবশ্যই সৃষ্টি করবেন। সিলসিলা সহিহ হাদিস 575 সিহিহুল জামে হাদিস 4038) ইমাম কুরতুবি বলেন, সাহাবীরা রাসুল (সা:) এর উক্ত কথা থেকে নিষেধই বুঝিয়েছেন। ফলে এর অর্থ দাঁড়ায় রাসাল (সা:) যে বলেছেন তোমরা আজল কর না করা তোমাদের কর্তব্য।(পরিবার ও পারিবারিক জীবন)

বনে সীরিন এর মতে, আজল সম্পর্কে স্পষ্ট নিষেধ না থাকলেও এ যেন নিষেধের একেবারে কাছাকাছি এতে কোন সন্দেহ নাই।(পরিবার ও পারিবারিক জীবন) হযরত জাবির (রা:) বলেছেন, নবী করিম (সা:) এর খেদমতে একজন আনসারী এসে বলেছেন, আমার কাছে একটি ক্রীতদাসী রয়েছে, এবং আমি তার থেকে আজল করি। তখন নবী করিম (সা:) বলেছেন আল্লাহর যা করার ইচ্ছা করেছেন, তা বন্ধ করার সাধ্য আজলের নাই। জুজামা বর্ণিÕত হাদিসে রাসুল (সা:) আজল সম্পর্কে বলেছেন, নিশ্চয়ই এ হচ্ছে গোপন হত্যা। রাসুল (সা: এর নিকট এক ব্যক্তি আজল করার অনুমতি চাইলে রাসুল (সা:) বলেছেন যে শুক্রে সন্তান হবে তা যদি তুমি পাথরেও নিক্ষেপ কর তাহলেও আল্লাহ তায়ালা তা দিয়ে সন্তান পয়দা করবেন। 

রাগিব ইসফাহানীর মতে, আজল করে শ্রক্র বিনষ্ট করা এবং তাকে তার আসল স্থানে নিক্ষেপ না করা সম্পর্কেi স্পষ্ট নিষেধ।(পরিবার ও পারিবারিক জীবন)

মুয়াত্তা গ্রন্থ প্রণেতা ইমাম মালেক (রহ:) বলেন, যে ইবনে ওমর (রা:) ছিলেন তাদের অন্যতম যাঁরা আজল পছন্দ করতেন না।(ইসলমের দৃষ্টিতে জন্ম নিয়ন্ত্রন) সুতরাং হাদিসগুলো বিশ্লেষণ করলে এ কথা প্রমাণিত হয় না যে উক্ত হাদিসগুলো দ্বারা জন্ম নিয়ন্ত্রন বৈধ। এ সমস্ত হাদিসের মর্মাথ না বুঝে জন্ম নিয়ন্ত্রনকে বৈধ বলা চরম ধৃষ্টতা এবং নির্বুদ্ধিতা এবং আল্লাহর শরিয়তের সাথে তামাশা করা ছাড়া আর কিছুই না।

আইয়ামে জাহেলিয়াতে যেসব করণে সন্তান হত্যা করা হত, বর্তমান জামানায় জন্মনিয়ন্ত্রণও ঠিক একই কারণে গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু সে যাগের আজল এর উদ্দেশ্য সম্পূর্ণv ভিন্ন। সে যুগে তিনটি করণে মুসলমানদের মধ্যে আজল এর প্রচলন ছিল। (এক) দাসীদের গর্ভে নিজের কোন সন্তান জন্মানো তাঁরা পছন্দ করতেন না, সামাজিক হীনতার কারণে। (দুই) দাসীর গর্ভে কারো সন্তান জন্মালে উক্ত সন্তানের মাকে হস্তান্তর করা যাবে না, অথচ স্থায়ীভাবে দাসীকে নিজের কাছে রেখে দিতেও তারা প্রস্তুত ছিল না। (তিন) দুগ্ধপায়ী শিশুর মা পুনরায় গর্ভ ধারণ করার ফলে প্রথম শিশুর স্বাস্থ্যহানীর আশংকা অথবা পুনরায় সন্তান গর্ভে ধারণ করলে মায়ের স্বাস্থ্যের বিপর্যয় আশংকা কিংবা সন্তান প্রসবের কষ্ট সহ্য করার অনুপযুক্ত তা চিকিৎসকের পরামর্শে যাথাযোগ্য বিবেচনায় এক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। 

আমরা বলতে পারি যে জন্ম নিয়ন্ত্রন জনসংখ্যা বিষ্ফোরণ সমস্যার প্রকৃত সমাধদান নয়। প্রকৃত পক্ষে জনসংখ্যাকে দক্ষ শ্রমশক্তিতে রূপান্তরিত ও উৎপাদন বাড়ানো অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উপকরণাদির উন্নয়নের মধ্যেই রয়েছে এ সমস্যার প্রকৃত সমাধান। 


জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি :

জন্ম নিয়ন্ত্রনের পদ্ধতি দু প্রকার (1) সাময়িক ব্যবস্থা (2) স্থায়ী ব্যবস্থা।

(1) সাময়িক ব্যবস্থা :

(ক) আজল তথা ভিতরে বীর্যপাত না করা (With drawl)

(খ) নিরাপদ সময় মেনে চলা (Safe period)

(গ) কনডম ব্যবহার (ঘ) ইনজেকশন পুশ (ঙ) পেশীতে বড়ি ব্যবহার (চ) মুখে পিল সেবন ইত্যাদি।

(2) স্থায়ী ব্যবস্থা:

(ক) পুরুষের অপারেশন (খ) নারীর অপারেশন।

(ক) পুরুষের অপারেশ : পুরুষের অন্ডকোশে উৎপাদিত শুক্রকীবাহী নালী (Vas deferens) দুটি কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয়। ফলে পুরষের বীর্যপাত ঘটে, কিন্তু বীর্য xy ক্রমোজম শুক্রকীট না থাকায় সন্তান হয় না। (খ) নারীর অপারেশন : নারীর ডিম্বাশয়ে উৎপাদিত ডিম্ববাহী (Fallopian Tube) কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয। ফলে xx ক্রমোজম ডিম্ব (Matured Ovumআর জরায়ুতে প্রবেশ করতে পারে না। নারী অথবা পুরুষ যোকোন একজন স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে, অপজনকে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয় না। কারণ ডিম্ব পুরুষের শুক্রকীট দ্বারা নিষিক্ত না হলে সন্তানের জন্ম হয় না। (ডা. এস এন পান্ডে, গাইনিউকলজি শিক্ষা, কলকাতা, আদিত্য প্রকাশনী 1977)  

পরিবারে ভাঙ্গন

ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে প্রত্যেক বিষয়েই পরিকল্পনার ভিত্তিকে কাজ হওয়া উচিত। বিনা পরিকল্পনায় কোন কাজই ফলদায়ক হতে পারে না। আল্লাহ তায়ালা বলেন, এ বিশ্বজগত বিনা পরিকল্পনায় সৃষ্টি করেননি। তাই তাঁর সৃষ্টিতে কোথায়ও কোন অসমঞ্জ্যতা, বিশৃঙ্খলা, অনিয়ম ও অন্য কোন রকম দোষক্রটি খুঁজে পাওয়া যায় না।

আল্লাহ তায়ালা মানুষকে ইচ্ছা ও চেষ্টার ক্ষেত্রে যে স্বাধীনতা দিয়েছেন তারই ধরুন মানুষ আল্লাহর বিধান মেনে চলে না। ফলে সেখানে অসংগতি, অশান্তি ও সমস্যার সৃষ্টি হয়। মহাশুণ্যের মহালোকে, মহাসমুদ্রে, বণ, জঙ্গলে ও পশুজগতে কখনও মানস সমাজের মত বিশৃঙ্খলা দেখা যায় না। কারণ ঐসব ক্ষেত্রে আল্লাহর পরিকল্পনা তিনি নিজে বাস্তবে কার্যকর করেন। মানুষের মত স্বাধীনতা তিনি তাদেরকে দেননি। (যুক্তির কষ্টিপাথরে জন্ম নিয়ন্ত্রন)

ইসলামী সমাজ ব্যবস্থায় পরিবার হল মানুষ গড়ার কূল কেন্দ্র, এবং সমাজ গঠনের মূলভিত্তি। এ জন্য পরিবার গড়ার ব্যাপারে আল্লাহর পরিকল্পনা অত্যন্ত ব্যাপক। পারিবারিক জীবনে সর্বাঙ্গীন সুন্দর করার জন্য ইসলাম যত বিস্তারিত বিধান দিয়েছে সমাজ ও রাষ্ট্রের কোন অংগনের জন্য এমন পূর্ণাঙ্গ বিধি-বিধান দেয়া আল্লাহ পাক প্রয়োজন বোধ করেন নি। (যুক্তির কষ্টি পাথরে জন্ম নিয়ন্ত্রন) জন্ম নিয়ন্ত্রন (Birth Control) এর সরঞ্জাম সহজ হওয়ার ফলে গর্ভ- ধারণের আশংকা নেই মনে করে অবিবাহিত মেয়েরাও পুরুষের নিকট দেহ দান করছে। প্রকৃত পক্ষে Birth Control পরিবার ভাঙ্গার এক মোক্ষম হাতিয়ারে এবং নিরাপদ যিনার সুযোগ থাকায় অবৈধ যৌন সম্পর্ক সহজ হয়ে গেছে। পরিবারে স্বামী-স্ত্রী পারস্পরিক আস্থা শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস বিপন্ন হয়ে পড়েছে। স্ত্রীর গর্ভে কার সন্তান রয়েছে সে ব্যাপারেও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ইদানিং প্রায়শ: আমার দেশের নায়ক নায়ীকারা সন্তান নিয়ে টিভির পর্দায় হাজির হয়ে জানান দিচ্ছে আমার সন্তানের বাবা অমুক।

সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়

জন্ম নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে পারিবারিক জীবনে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের মধ্যে যে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে তাতে ক্রমশ: পরষ্পরিক সদ্ভাব ও ভালবাসা হ্রাস এবং অবশেষে ঘৃণা ও অন্তোষ সৃষ্টি করে। তাছাড়া মেজাজের ভারসাম্য হারিয়ে যায় এবং মেজাজে দিন দিন রক্ষ হয়ে উঠে, ফলে দাম্পত্য জীবনের সুখ শান্তি বিদায় নেয়। সন্তান স্বামী স্ত্রীকে চিরদিন একত্রে সংসার গঠনের ভূমিকা রাখে। বলা হয়, সন্তানই পরিবার গঠনের সেঁতুবন্ধন।

ইউরোপ ও আমেরিকাতে দাম্পত্য জীবন অত্যন্ত দুর্বল এবং জন্মনিরোধ প্রসারের ফরে তালাকের সংখ্যাও দিনি দিন দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে, সেখানে দাম্পত্য জীবন ও পারিবারিক জীবন চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন। (ইসলমের দৃষ্টিতে জন্ম নিয়ন্ত্রন) ইউরোপের সামাজিক দৃশ্যপট বদলে যায় শিল্প বিপ্লবের অভিঘাতে। আমুল পরিবর্তন আসে গ্রামীন জীবনেও, ভেঙ্গে যায় পারিবারিক জীবনের ভিত। নারীরা কল-কারখানায় নির্বিঘ্নে কাজ করতে শুরু করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে লাখ লাখ ইউরোপিয়ান ও আমেরিকান তরুণ নিহত হল। ফলে বিধবা হল অগণিত নারী। যুদ্ধ বিড়ম্বিতা নারীরা বাধ্য হয়ে পুরুষের শুনুস্থান পুরণ করতে গিয়ে কারখানা মালিকের নিকটে শ্রম বিক্রয়ের পাশাপিাশি কমনীয় দেহাটাও মনোরঞ্জনের জন্য দিতে হত। যৌবনের তাড়নায় ইন্দ্রিয় ক্ষুদা চরিতার্থ  করার জন্য তাকে বেছে নিতে হল অবাধ বিচরণের পথ। আর নারীর মনের গভীরে পেটের ক্ষুদার সঙ্গে যুক্ত হল অতৃপ্ত যৌনতা এবং দামী পোষাক ও প্রসাধনীর প্রতি প্রচন্ড মোহ। (ভ্রান্তির বেড়াজালে ইসলাম) 

জন্ম নিয়ন্ত্রণের ফলে চরিত্রের ক্ষতি সাধিত হয়। এ ব্যবস্থা নারী পুরুষের অবাধ ব্যভিচারের সনদ দিয়ে থাকে। কেননা এতে জারজ সন্তান গর্ভে ধারণ ও দুর্নাম রটনার ভয় থাকে না। এ জন্য অবৈধ যৌন সম্পর্ক স্থাপনে অতি উৎসাহী হয়ে উঠে। Dr Westr Marck তার বিখ্যাত গ্রন্থ Future of Marriage in Western Civilization এ বলেন, গর্ভনিরোধ বিদ্যা বিয়ের হার বাড়াতে পারে। কিন্তু এর ফলে বিয়ে বন্ধন ছাড়াই যৌন মিলনের পথও অত্যন্ত প্রশস্ত হয়ে যায়। (ভ্রান্তির বেড়াজালে ইসলাম) জন্ম নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে শিশুদের মেধা বিকাশে বাধাগ্রহন্থ হয়। যদি ছোট-বড় ভাই বোন খেলার সাথী থাকে, তবে তাদের সাথে একত্রে থাকা, একত্রে খেলাধুলা করা ও মেলামেশা, সাহায্য-সহযোগিতা ইত্যাদি শিক্ষণীয় গুণাবলী তার মাঝেও প্রস্ফটিত হয়। মনস্তত্ব বিশেজ্ঞদের মতে, একাকিত্বের ফলে শিশুদের মন-মগজের সুষ্ঠ বিকাশে বাধা সৃষ্টি হয়।

ইসলামের বিধান

মহান আল্লাহ পৃথিবীর প্রথম মানব হযরত আদম (আ:) কে সৃষ্টি করেন। আল্লাহ তায়ালা আদম (আ:) এর একাকীত্ব দূর করার জন্য জীবন সঙ্গিনী হিসাবে হাওয়া (আ:) কে সৃষ্টি করেন। তাদের দুজনের মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবীকে মানব সন্তান দিয়ে কানায় কানায় পরিপূর্ণ করে দিতে চেয়েছেন। আর সমস্ত মানব তাঁর (আল্লাহর) একত্ব ঘোষণা পুর্বক দাসত্ব করবে। এ হল আদম (আ:) এবং হাওয়া (আ:) এর সৃষ্টি একান্ত উদ্দেশ্য। বর্তমান দুনিয়ায় জন্ম নিয়ন্ত্রনের স্বপক্ষে প্রধান যুক্তিসমূহ হল খাদ্যের অভাব, স্থানের অভাব, তাবে এ সমস্ত যুক্তি কতটুকু সত্য তা আমরা আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারব। খাদ্যাভাবে ও স্থানের সংকটের কারণে আজল করা সঙ্গত করা হলে তার অর্থ হয় আজল জায়োজ প্রমাণকারী হাদিস সমূহ আল্লাহর রিযিকদাতা হওয়ার বিশ্বাসকে ভিত্তিহীন করে দিচ্ছে। কুরআন মজিদে সন্তান হত্যা নিষেধ করে যে, সব আয়াত উদ্বৃত হয়েছে তার ভিত্তি হচ্ছে এ কথার উপর আমিই তাদের রিযিক দেব, তোমাদেরকে আমিই রিযিক দিয়ে থাকি।

আল্লাহ বলেন, وَلَا تَقْتُلُوا أَوْلَادَكُم مِّنْ إِمْلَاقٍ ۖ نَّحْنُ نَرْزُقُكُمْ وَإِيَّاهُمْ ۖ وَلَا تَقْرَبُوا الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ  এবং তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা কর না দারিদ্রের কারণে, আমিই তোমাদের রিযিক দান করি এবং তাদেরও আমিই রিযিক দান করবো। (সুরা আনয়াম, আয়াত 151)আল্লাহ রব্বুল আলামীন রিযিকের দায়িত্ব সম্পর্কে বলেন, وَمَا مِن دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا وَيَعْلَمُ مُسْتَقَرَّهَا وَمُسْتَوْدَعَهَا ۚ كُلٌّ فِي كِتَابٍ مُّبِينٍ দুনিয়ায় এমন কোন প্রাণী নেই, যার রিযিকের দায়িত্ব আল্লাহর উপর ন্যাস্ত নয়। (সুরা হুদ, আয়াত 6)  

আল্লাহ শুধু মানুষের রিযিকই নয়, সমস্ত প্রাণীর যাবতীয় প্রয়োজন পূরণের জিনিসপত্রই সৃষ্টি করে থাকেন। আল্লাহকে রাজ্জাক বলে, বিশ্বাস করার অর্থই এই যে, তিনি প্রত্যেকের রিযিক নিশ্চয়ই তৈরি করেছন, উপার্জনের চেষ্টার অভাব, সমাজে সম্পদ বন্টনের ভ্রান্তনীতি, আন্তর্জাতিক বিনিময়ে বেইনসাফি ইত্যাদির কারণে অভাব দেখা দেয়। অভাবের কারণগুলো দূর করার পরিবর্তে মানুষ কমাবার প্রচেষ্টায় তারা ব্যাতিব্যাস্ত।

আল্লাহ বলেন, الْمَالُ وَالْبَنُونَ زِينَةُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ۖ وَالْبَاقِيَاتُ الصَّالِحَاتُ خَيْرٌ عِندَ رَبِّكَ ثَوَابًا وَخَيْرٌ أَمَلًا ধন সম্পদ ও সন্তান সন্ততি দুনিয়ার জীবনের সৌন্দর্যb ও সুখ শান্তির উপাদান ও বাহন। (সুরা কাহাফ, আয়াত 46) আল্লামা আলুসী এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, ধন-সম্পদ হচ্ছে প্রাণ বাঁচানের উপায়। আর সন্তান হচ্ছে বংশ তথা মানব প্রজাতি রক্ষার মাধ্যম। (পরিবার ও পারিবারিক জীবন) 

একজন রুশ লেখক তার Biological Tragedy of Woman গ্রন্থে বলেছেন, নারী জন্মের উদ্দেশ্য হচ্ছে মানববংশ রক্ষা করা। (ইসলামের দৃষ্টিতে জন্ম নিয়ন্ত্রন)

উপরোক্ত আয়াত অনুযায়ী আল্লাহ শুধু মানুষের রিযিকের নয়, সমস্ত প্রাণী কুলের যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সৃষ্টি করে থাকেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, وَكَأَيِّن مِّن دَابَّةٍ لَّا تَحْمِلُ رِزْقَهَا اللَّهُ يَرْزُقُهَا وَإِيَّاكُمْ ۚ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ কত প্রাণীই রয়েছে যারা তাদের রিযিক বহন করে বেড়ায় না, আমি আল্লাহ তাদের ও তোমাদের রিযিক দান করি। (সুরা আনকাবুত, আয়াত 60) 

রিযিক দানের ব্যাপারে সম্পূর্ণwরূপে আল্লাহ তায়ালার এখতিয়ার এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, لَهُ مَقَالِيدُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَن يَشَاءُ وَيَقْدِرُ ۚ إِنَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ তিনি আসমান ও যমিনের যাবতীয় ভান্ডারের অধিকারী,  তিনি যাকে খুশি বেশি এবং যাকে খুশি কম রিযিক দান করেন, আর তিনি সর্ব বিষয়ে জ্ঞাত।(সুরা আশ শুরা, আয়াত 12) আল্লাহ পাক শুধু মানুষকে কেন যাবতীয় বস্তুর প্রয়োজন মেটানোর ব্যবস্থা সৃষ্টি করে রেখেছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, إِنَّا كُلَّ شَيْءٍ خَلَقْنَاهُ بِقَدَرٍ নিশ্চয়ই আমি যাবতীয় বস্তু পরিমাণ মত ‍সৃষ্টি করেছি। (সুরা কামার, আয়াত 49)

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, وَإِن مِّن شَيْءٍ إِلَّا عِندَنَا خَزَائِنُهُ وَمَا نُنَزِّلُهُ إِلَّا بِقَدَرٍ مَّعْلُومٍ আমার নিকট সব জিনিসেরই ভান্ডার রয়েছৈ আমি নিদিষ্ট পরিমাণ নাযিল করে থাকি। (সুরা আল হিজর, আয়াত 21) আল্লাহ তার সৃষ্টি সম্পর্কে বলেন, وَلَقَدْ خَلَقْنَا فَوْقَكُمْ سَبْعَ طَرَائِقَ وَمَا كُنَّا عَنِ الْخَلْقِ غَافِلِينَ আমি সৃষ্টি সম্পর্কে অমনোযোগী নই। (সুরা মোমেনুন, আয়াত 17)

নর নারীর শারিরীক চাহিদা পূরণের অন্তর্নিহিত লক্ষ্য মানববংশ বৃদ্ধির সঙ্গে দেহের প্রতিটি অঙ্গ স্ব স্ব দায়িত্ব পালনে তৎপর। নারী দেহের বৃহত্তম অংশ গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মানোর উদ্দেশ্যেই সৃষ্টি। নারী মা হওয়াসহ পৃথিবীর সমস্ত নারী সৃষ্টির উদ্দেশ্য মানববংশ রক্ষা ও সন্তান উৎপাদনের মাধ্যমে পারিবারিক কাঠামোতে সন্তানের সুষ্ঠু লালন পালন। 

1960 সালের 11 জানুয়ারি সাপ্তাহিক টাইম পত্রিকায় বৃটিশ অর্থনীতিবিদ প্রফেসর কলিন ক্লার্ক বলেন, দুনিয়ায় চাষপোযোগী যে জমি আছে তা ইংল্যান্ডের দক্ষ চাষীদের মত আবাদ করলে বর্তমান প্রচলিত চাষাবাদ পদ্ধিতিতেই এত বিপুল পরিমান খাদ্য উৎপন্ন হবে যে, তদ্বারা বর্তমান বিশ্বের জনসংখ্যার দশগুন মানুষকে ইউরোপীয় মানের খাদ্য সরবরাহ করা সম্ভব। অপর এক বৃটিশ অর্থনীতিবিদ ইসার অডিউপ তার Life and Money নাকম বিখ্যাত গ্রন্থে লিখেছেন, বিশ্বের প্রকৃত সম্পদ অসীম। কার্যকর প্রচেষ্টায় আমরা এর পরিমাণ যে কত বৃদ্ধি করতে পারি তা হিসাব করা প্রায় অসম্ভব। (যুক্তির কষ্টি পাথরে জন্ম নিয়ন্ত্রন)

আমেরিকা, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া ও ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশের উদ্বৃত্ত খাদ্যদ্রব্য পশুকে খাওয়ার পরও সমুদ্রে ফেলে দেয় বা আগুনে জ্বালিয়ে দিতে বাধ্য হয়। তবুও তারা কম মূল্যে অন্য দেশেকে দিতে রাজী নয়। জাতীয় স্বার্থে তাদের এ অমানবিক মনোবৃত্তিই বিশ্বে কৃত্তিম খাদ্যাভাব সৃষ্টি করেছে। 

অতএব জাতিসংঘ এর প্রতিকারের উদ্যোগ নিলে কোন দেশেই খাদ্যের ঘাটতি থাকতে পারে না। জনসংখ্যার চাপেই মানুষের চাহিদা বাড়ে। অভাব না থাকলে আবিস্কারের প্রেরণা সৃষ্টি হয় না।

মানুষ কিভাবে কমানো যায়

বলা হচ্ছে পৃথিবীতে যে, হারে মানুষ বাড়ছে সে হারে জমি বাড়ছে না। তাই মানুষ কমাতে হবে। বর্তমান বিশ্বে এখনও পর্যন্ত যে পরিমাণ অনাবাদী জমি পড়ে আছে তা পূর্ণ হতে হাজার হাজার বছর দরকার। প্রশান্ত মহাসাগরে যে হারে দ্বীপ জেগে উঠছে তা পৃথিবীর বর্তমান স্থলভাগের সমান বলে অনুমান করা হচ্ছে। বর্তমান স্থলভাগের অধিকাংশ এলাকা এখনও অনাবাদীই রয়ে গেছে। অষ্ট্রেলিয়া মহাদেশ উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা এবং আফ্রিকার বিস্তীর্ণ বিরাট এলাকা অনাবাদী পড়ে আছে। পানির ব্যবস্থা করলে বিশাল মরুভুমি আবাদযোগ্য করা সম্ভব। আরবের মরুভুমি মরুদ্দানে পরিণত হচ্ছে। পৃথিবীর সবটুকু আবাদ করতে পারলে কয়েক হাজার বছরেও স্থানাভাব হবে না। দুনিয়ায় আজ পর্য ন্ত সভ্যতার যত উন্নতি হয়েছে তার মূল কারণই প্রয়োজনের অনুভুতি। (Sense of Necessity) সমস্ত আবিস্কারের জননী হল প্রয়োজন। যেদিন এ প্রয়োজনবোধ থাকবে না সেদিন মনাব সভ্যতা গতিহীন হয়ে পড়বে। প্রয়োজন পুরণের প্রচেষ্টা না বাড়িয়ে মানুষ কমানোর চেষ্টা দ্বারা মানব সভ্যতার বিপর্যয় ছাড়া আর কিছুই নয়। (যুক্তির কষ্টি পাথরে জন্ম নিয়ন্ত্রন) অথচ স্থানাভাবের এই কৃত্রিম অজুহাত তুলে জন্ম নিয়ন্ত্রন Birth Control এর মত একটি অবৈধ পন্থা সমাজে চালু করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। অথচ আল্লাহ তায়ালা বলেন, وَلَا تَقْتُلُوا أَوْلَادَكُمْ خَشْيَةَ إِمْلَاقٍ ۖ نَّحْنُ نَرْزُقُهُمْ وَإِيَّاكُمْ ۚ إِنَّ قَتْلَهُمْ كَانَ خِطْئًا كَبِيرًا তোমরা অভাব ও দারিদ্রতারা আশংকায় তোমাদের সন্তানদের হত্যা করো না। (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত 31)

আরবেদর মধ্যে দারিদ্রতার ভয়ে সন্তান হত্যার প্রথা বিদ্যমান ছিল। সে সময় সন্তান পেটে আসা বা জন্ম নেয়ার পূর্বে মেরা ফেলার পদ্ধতি জানা ছিল না। কিন্তু বর্তমানে গর্ভস্থ সন্তান হত্যাকরা সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আরবের জাহিলিয়াত যুগে যে নিয়তে সন্তান হত্যা করত, আধুনিক জাহেলিয়াতে সে নিয়তে জন্ম নিয়ন্ত্রন করা হচ্ছে। শুধু পন্থা ভিন্ন। 

কিন্তু শয়তাল আল্লাহর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলল, وَلَأُضِلَّنَّهُمْ وَلَأُمَنِّيَنَّهُمْ وَلَآمُرَنَّهُمْ فَلَيُبَتِّكُنَّ آذَانَ الْأَنْعَامِ وَلَآمُرَنَّهُمْ فَلَيُغَيِّرُنَّ خَلْقَ اللَّهِ ۚ وَمَن يَتَّخِذِ الشَّيْطَانَ وَلِيًّا مِّن دُونِ اللَّهِ فَقَدْ خَسِرَ خُسْرَانًا مُّبِينًا আমি অবশ্যিই তাদেরকের নির্দেশ দিব। আর তারা তদনুযায়ী সৃষ্টির কাঠামোতে রদবদল করবে।(সুরা নিসা, আয়াত 119এই রদবদল শব্দের অর্থ খুঁজতে গেলে বর্তমান যুগের জন্ম নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা অন্যতম। আর জন্ম নিয়ন্ত্রন আন্দোলনের নামে যারা সন্তান হত্যা বা অনাগত ভবিষ্যত বংশধরদের হত্যা করে চলেছে, তারা সন্তানের জন্মকেই দারিদ্রের কারণ বলা চিহিৃত করেছে।

জাহেলী যুগে সন্তানের আধিক্য থেকে বাঁচার জন্য লোকেরা সন্তান প্রসবের সঙ্গে সঙ্গে তাকে হত্যা করত। গর্ভ নিরোধের প্রাচীন ও আধুনিক যত ব্যবস্থাই গ্রহণ করা হয়েছে, সবগুলোই মানববংশ ধ্বংসের পক্ষে কঠিন বিপদ বিশেষ।(পরিবার ও পারিবারিক জীবন)

জনসংখ্যার বৃদ্ধিকে ইউরোপ তাদের জন্য ভয়াবহ বিপদ বিবেচনা করছে। (ইসলামের দৃষ্টিতে জন্ম নিয়ন্ত্রন) জন্ম নিয়ন্ত্রন জন্মহারে হ্রাসের একমাত্র কারণ না হলেও অন্যতম প্রধান কারণ একথা নিশ্চিত। গোটা বিশ্ববাসী একথা স্বীকার করেছেন, যে জন্মহার হ্রাস পাওয়ার শতকরা 70 ভাগ জন্ম নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থার দরুন ঘটে থাকে। ইনসাক্লোপিডিয়া অব ব্রিটানিকাতে বলা হয়েছে, পাশ্চাত্য দেশসমুহের জন্মহার হ্রাস প্রাপ্তির কারণগুলোর মধ্যে জন্ম নিয়ন্ত্রণের কৃত্রিম উপকরণাদির প্রভাব অত্যাধিক। জন্ম নিয়ন্ত্রন ও ইচ্ছাকৃতভাবে পরিবারকে সীমিত করার প্রবণতার কারণেই জন্মহার হ্রাস পাচ্ছে। (রিপোর্ট অব দি রয়াল কমিশন অন পপুলেশন 1949) ইউরোপ ও আমেরিকাতে যদিও সম্পদের অভাব না থাকেলেও শতকরা 70 টি পরিবার জন্ম নিয়ন্ত্র করে পরিবার গুলোকে ক্ষুদ্র আকারে করে রাখছে জন্ম নিয়ন্ত্রন প্রচেষ্টার মাধ্যমে।           

অর্থনৈতিক ক্ষতি :

জন্মনিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে নৈতিক ও সামাজিক ক্ষতির পাশাপাশি ও এ সমস্ত উপকরণ ব্যবহারের জন্য জাতীয় রাজস্বে বিরাট ক্ষতি সাধিত হয়। এটাকে এক ধরনের অপচয় বলা যেতে পারে। মহান আল্লাহ বলেন, إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ ۖ وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِرَبِّهِ كَفُورًا তোমরা অপব্যয় করা না, নিশ্চয়ই অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। يَا بَنِي آدَمَ خُذُوا زِينَتَكُمْ عِندَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَكُلُوا وَاشْرَبُوا وَلَا تُسْرِفُوا ۚ إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُسْرِفِينَ খাও পান কর, অপব্যয় করা না। নিশ্চয়ই তিনি (আল্লাহ) অপব্যয়কারীকে পছন্দ করে না।(সুরা আরাফ, আয়াত 31) 

বেকারত্ব বৃদ্ধির কারণ জনসংখ্যা হ্রাস জনিত যুক্তি দিন দিন অধিকতর জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর কারণ হল জন্মহার ধারাবাহিকভাবে Tapering কমে যাওয়ার ফলে একদিকে পুঁজি বিনিয়োগের প্রয়োজন হ্রাস পায় পক্ষান্তরে বাড়তি জনসংখ্যার কারণে পুঁজি বিনিয়োগ ব্যবস্থা উন্নত হয়।(ইসলামের দৃষ্টিতে জন্ম নিয়ন্ত্রন) বাংলাদেশ অতি ছোট দেশ। এদেশের সামান্য আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা অত্যন্ত বেশি। কিন্তু প্রতিবছর এদেশ শ্রমশক্তি বিদেশে রফতানি করে কোটি কোটি বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করছে। এই বিশাল জনসংখ্যা যদি শ্রমশক্তিতে রূপান্তরিত করা যায়, তাহলে এ জনসংখ্যা ক্ষতির কারণ না হয়ে আশীর্বাদের কারণ হবে। যে বৈদেশিক মুদ্রা দেশের রাজস্ব খাতে বিরাট ভূমিকা রাখছে, নিশ্চয়ইতা বেকারত্ব দুর করতেও বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। অন্যদিকে পরিবার পরিকল্পনার নামে জন্মনিয়ন্ত্রন ব্যবস্থার ফলে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। একদিকে জনশক্তির অপমৃত্যু, অন্যদিকে অর্থনৈতিক অবক্ষয়। কনডম, ইনজেকশন, বড়ি, ও খাবার পিল ইত্যাদি সরকারের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। আবার বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানি যে পিল বের করেছে। এগুলো ক্রয় করে জনগণ ব্যবহার করছে।                            

জন্ম নিয়ন্ত্রণের ফলে শ্রমজীবী লোক দিন দিন কমে যাচ্ছে। যার ফলে পুঁজিবাদীরা উচ্চমূল্যে বিদেশ থেকে শ্রমিক আমদানী করে মিল কারখানায় উৎপাদন করছে। এতে দ্রুতগতিতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ার ফলে পণ্যের ব্যবহারও দিন দিন কমে যাচ্ছে। অতএব জন্মনিয়ন্ত্রন আমাদের কোন সুফল বয়ে আনেনি বরং অর্থনৈতিক, সামাজিক ও নৈতিকতার মহাক্ষতির কারণ হিসাবে পরিগনিত হয়েছে। 

ব্যভিচার বৃদ্ধি 

আল্লাহ তায়ালা মানুষের মধ্যে নৈতিক সত্তার প্রাধান্য চান। নৈতিকতাই মনুষ্যত্ব এবং নৈতিক চেতনাই মানুষের শ্রেষ্ঠতম মূলকারণ। নৈতিকতাবোধ প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে। বিবেক অন্যায় পথে দেহের দাবী পুরণে ও আপত্তি জানায় এবং অন্যায় করলে বিবেশ দংশন করে। দেহ সত্তা ও নৈতিক সত্তার এ দ্বন্দ্বে বিবেকের বিজয় হলেই মনুষ্যত্বের বিকাশ ও মানবতার কল্যাণ হয়। 

জন্ম নিয়ন্ত্রণের ফলে ব্যভিচার বৃদ্ধি পায়, তার করণে বর্তমান স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যায়ের ছাত্রীরা পর্যন্ত বেই এর ব্যাগে জন্ম নিয়ন্ত্রণের মাল-মসলা নিয়ে যাওয়ার সুযোগ না পেলে এর ব্যভিচারী হতে সাহসী হতো না। সমাজের দায়িত্বহীন যৌন সম্পর্কে র সকল সুযোগ সৃষ্টির পর জন্মরোধ পদ্ধতি এক শ্রেণির নারীকে সখের বেশ্যায় পরিণত করার পাইকারী সনদ দিয়ে দিয়েছে। সমাজের পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য ইসলাম অপরিসীম গুরুত্বারোপ করে। জারজ সন্তানের জন্ম মুসলিম সমাজের চরম নিন্দনীয়। তাই হারামাযাদাদের বৃদ্ধি যাদের কাম্যও নয়, তারা প্রচলিত অবাধ জন্ম নিয়ন্ত্রন সমর্থন করতে পারে না। তাছাড়া জন্মরোধ দ্বারা আল্লাাহর সৃষ্টিকে রোধ করা সম্ভব নয়।

আল্লাহ যাদেরকে কেমায়ত পর্যন্ত দুনিয়ায় পাঠাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা রোধ করার উপায় নাই। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষকে দুনিয়ায় পাঠাবার পূর্বেই সকল মানুষের রুহকে সেমবেত করে জিজ্ঞাসা করলেন, أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْ ۖ قَالُوا بَلَىٰ  আমি কি তোমাদের রব নই। সবাই জাবাব দিল হ্যাঁ আপনিই আমাদের বর। (সুরা আরাফ, আয়াত 172এই আয়াতে থেকে প্রমাণিত হয় যে, সব মানুষকে সৃষ্টি করা হয়ে গেছে, কেবল দুনিয়ার পাঠাবার কাজ এখনও বাকী আছে।

ব্যভিচার সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَىٰ ۖ إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا   তোমরা অবৈধ যৌন সম্ভোগের নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত 32) শয়তান মানুষকে দারিদ্রতার ভয় দেখিয়ে অসমাজিক, অর্থনেতিক কাজের প্রতি প্রলুব্ধ করে। নারী জাতি আল্লাহ ভীতির পাশাপাশি আরও একটি নৈতিকতা রক্ষা করতে বাধ্র হয়। তাহলে অবৈধ সন্তান জন্মের ফলে সামাজিক মর্যাদা বিনষ্ট হবার আশংকা। কিন্তু জন্ম নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থার ফলে, এ আশংকা থেকে একদম মুক্ত। যারা নৈশক্লাবে নাচ-গান করে, পতিতা বৃত্তি করে, প্রেমের নামে রঙ্গলীলায় মেতে উঠে, তারা অবৈধ সন্তান জন্মানোর আশংকা করে না। তাছাড়া কখনও হিসাব নিকাশ গড়মিল হয়ে অবৈধ সন্তান যদিও গর্ভে এসে যায, তবে স্যাটেলাইট ক্লিনিক নামের সন্তান হত্যার গ্যারেজে গিয়ে প্রকাশ্যে গর্ভ নষ্ট করে ফেলে 

ইংল্যান্ডের প্রতি 100 জন নারীর মধ্যে 86 জন বিয়ে ছাড়াই যৌন সম্পর্কে স্থাপন করে। অবৈধ সন্তান জন্মের সময় এদের শতকরা 40 জন নারীর বয়স 18-19 বছর, 30 জন নারীর বয়স 20 বছর এবং 20 জন নারীর বয়স 21 বছর। এরা তারাই যারা জন্ম নিয়ন্ত্রনের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরও দুর্ঘটনাবশত গর্ভবতী হয়েছিল। (Schwarz Oswald the psychology of Sex (London: 1951)

Indian Council for Medical Research এর ডিরেক্টর জেনারেল অবতার সিংহ পেইন্টাল বলেন, We used to think our women were chaste, But people would horrified at the level of promise cruelty here. অর্থাৎ আমাদের নারীদেরকে আমরা সতী বলে মনে করতাম। কিন্তু অবৈধ যৌনকর্ম এখানে এতবেশি বৃদ্ধি পেয়েছে যে, লোকে এতে ভীত না হয়ে পারে না। (নারী 97, হাফেজ মাসউদ আহমদ; আত তাহরীক, বিশ্বের বিভিন্ন ধর্ম ও সমাজে নারী : একটি সমীক্ষা, জানুয়ারি 03) উন্নত বিশ্ব অর্থাৎ আমেরিকা ও ইউরোপে বিদ্যালয় সমূহে অশ্লীল সাহিত্যের চাহিদা সর্বােপেক্ষা বেশি। যুবক যুবতীরা এসব অধ্যয়ন করে অশালীন কাজে লিপ্ত হয়। প্রাশ্চাত্যের শিক্ষা পতিষ্ঠান সমূহে তাদের শিক্ষা ব্যয়ের প্রায় অধিকাংশ খন্ডকালীন যৌনকর্মী হিসাব টাকা আয় করে থাকে। ঐসব দেশসমূহে যৌন সম্পর্কীয় বিধি-বিধান অত্যন্ত শিথিল। থাইল্যান্ডের ছাত্রীদের বিপুল যৌনতা লক্ষ করা যায়। (মাসিক পৃথিবী (প্রাশ্চাত্যের যৌন বিকৃতি), জুলাই 01) 

চীনের ক্যান্টন শহরে কুমারীদের প্রেম বিষয়ে শিক্ষা দেয়ার জন্য বিদ্যালয় খোলা হয়েছে। (জহুরী খবরের খবর, 1খন্ড) পশ্চিমা সভ্যতার পুজারীরা সর্বজনীন অবৈধ যৌন সম্পর্কের মহামারীর পথ প্রশস্ত করেছে। (মরিয়ম জামিলা, ইসলাম ও আধুনিকতা)

চীনে যৌন স্বাধীনতার দাবী সম্বলিত পোষ্টারে যার সাথে খুশি যৌন মিলনে কুষ্ঠিত না হবার আহবাহ জানানো হয়ে। (জহুরী খবরের খবর, 1খন্ড)

ইউরোপে যৌন স্বাধীনতার দাবীতে পুরুষের মত নারীরাও নৈতিকতা হারিয়ে উচ্ছৃংখল ও অনাচারী এবং সুযোগ পেলেই হন্যে হয়ে তৃপ্ত করতে যৌনক্ষুদা। অশুভ এই প্রবণতার ফলে বৈবাহিক জীবন ও পরিবারের প্রতি চরম অনিহা সৃষ্টি হয়। (ভ্রান্তির বেড়াজালে ইসলাম)

প্রাশ্চাত্যে ক্রমবর্ধমান অবৈধ যৌন স্বাধীনতাই সবচাইতে ক্ষতি সাধন করছে। নারীর দেহকে বাণিজ্যিকরূপ দেয়ার কোন প্রচেষ্টাই বাকী রাখা হয়নি। অবিবাহিত মহিলাদের গর্ভ ধারেণের সংখ্যা বৃদ্ধি, অবৈধ সন্তান জন্ম, গর্ভপাত, তালাক, যৌন অপরাধ ও যৌন ব্যাধিই এর প্রমাণ। অপর দিকে অবৈধ যৌন সম্পর্কের ফলে কোন আইন-বিচার ও আইনী শাস্তির বিধান নেই। বরং এটাকে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যাপার বলে বিবেচনা করা হয়। (ইসলাম ও আধুনিকতা)

বর্তমান বাংলাদেশে প্রায় প্রতিদিনই পত্রপত্রিকার মাধ্যমে দেখা যায় যে ময়লার ডাসবিনে, ডোবায়, নালায় এবং ঝোঁপ জঙ্গলে জীবিত অথবা মৃত সদ্যপ্রসূত শিশু সন্তান পাওয়া যায়। 

وَإِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِن بَنِي آدَمَ مِن ظُهُورِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَأَشْهَدَهُمْ عَلَىٰ أَنفُسِهِمْ أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْ ۖ قَالُوا بَلَىٰ ۛ شَهِدْنَا ۛ أَن تَقُولُوا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّا كُنَّا عَنْ هَـٰذَا غَافِلِينَ সুরা আরাফের 172 নং আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সব মানুষকে সৃষ্টি করা হয়ে গেছে, কেবল দুনিয়ায় পাঠাবার কাজ বাকী আছে। জন্ম নিয়ন্ত্রন প্রচেষ্টা দ্বারা তা বন্ধ করা যাবে না। তবে এতটুকু লাভ হচ্ছে যে, মানব সন্তান পিতা-মাতার বৈধ সন্তান হিসেবে দুনিয়ায় আসতো তাদেরকে হারামযাদা হিসাবে দুনিয়ায় আসতে বাধ্য করা হচ্ছে। ফলে সমাজ ও রাষ্ট্র এই হারামযাদাদের দ্বারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। সর্বেোপরি মনব সভ্যতার উৎকর্ষA সাধনের বিপরীতে সৃষ্টি হচ্ছে বিপর্যয়।

জটিল রোগের প্রাদুর্ভাব

নারী স্বাধীনতার নামে নারীর ব্যাভিচার দিনদিন প্রসার লাভ করছে। অবৈধ যৌন সম্ভোগের কারনে নারী পুরুষের মারাত্মক জটিল সব রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটছে। জন্ম নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে জীবানুনাশক ঔষধ, পিল, কনডম ইত্যাদি উপকরণ ব্যবহারের ফলে তৎক্ষণাথ কোন ক্ষতি হয় না। কিন্তু বেশ কিছুকাল যাবৎ এসব ব্যবহার করার ফলে মধ্যবর্তী বয়সে উপনীত হতে না হতেই নারী দেহের স্নায়ুতন্ত্রীতে বিশৃঙ্খলা (Nervous instability) দেখা দেয়। যেমন, নিস্তেজ অবস্থা, নিরানন্দ, উদাসীনতা, রুক্ষমেজাজ, বিষন্নতা, নিন্দ্রাহীনতা, মস্তিষ্কের দুর্বলতা, হাত-পা অবশ, শরীরে ব্যথা, স্তনে সাইক্লিক্যাল ব্যথা, অনিয়মিত ঋতু সৌন্দস্য নষ্ট ইত্যাদি। (ইসলামের দৃষ্টিতে জন্ম নিয়ন্ত্রন)

নারী পুরুষের অবৈধ যৌন মিলনে সিফিলিস, গণেরিয়া, প্রমেহ এবং এইডস এর মত মারাত্মক মরণ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। সিফিলিস রোাগে আক্রান্ত রোগী সুচিকিৎসা গ্রহণ না করলে তা এইডস রুপান্তরিত হয়। এইডস রোগের ভাইরাসের নাম এইচ আই ভি (HIV)। এই ভাইরাস রক্তের শ্বেত কণিকা ধ্বংস করে। 1981 সালে প্রথম এই রোগ ধরা পড়ে। 1983 সালে ফরাসী বিজ্ঞানী এইচ আই ভি ভাইরাসকে এই রোগের কারণ বল্গাহীন অবৈধ যৌন মিলনকে দায়ী করেন।

পরিশেষ

মানব জীবনের যত সমস্য দেখা দেয় তার সঠিক সমাধান যারা আল্লাহ ও রাসুলের দেখানো পথ করেন না তারাই সমাজের সমস্ত অশান্তি ও বিশৃ্ঙ্খলার হোতা। যাদের হাতে দেশের নেতৃত্ব তাদের ধ্যান ধারণা কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা পরিচালিত না হয় তাহলে দেশ ও জাতির সমস্য বেড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। সুতরাং আল্লাহ ও তার রাসুরের নির্দেশিত পথ ছাড়া আমাদের বাঁচার কোন উপায় বা গতি নাই। 

আমার প্রিয় মাতৃভুমি বাংলাদেশের দুর্ভাগ্যের মূল কারণ হল আদর্শ ও চরিত্রহীন নেতৃত্ব। 92 শতাংশ মুসলিম দেশ হিসাবে আমাদের পরিচালনার দায়িত্ব এমন সব লোকদের হাতে যাদের মন মগজ ও চরিত্র ইসলামী জ্ঞান ও আর্দশে র্গঠিত নয়। সঠিক জ্ঞান ও নির্মল চরিত্রের কোন বিকল্প নাই। দুর্নীতি পরায়ন নেতৃত্ব সমস্ত জাতিকে আজ রসাতলে নিয়ে গেছে। সাধারণ জনগন থেকে দুর্নীতির সুচনা হয় না। দুর্নীতির সূচনা হয় ‍উপর থেকে। অর্থাৎ মাথা থেকে। 

তাই তো সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা ছাড়া জাতির কোন সমস্যাই সমাধান হবার নয়। বরং দিনকে দিন আমাদের সমস্য জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব এমনি এমনি তৈরি হবে না। এর জন্য এ জাতিকে খাটতে হবে। আমাদের প্রিয় নবী (সা:) দীর্ঘ সাধনার পর একদল লোক তৈরি করে তারপর তাদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দিয়েছেন। আর তখনই মানবজাতি মুক্তির পেল। সততা, চরিত্রবান ও বিজ্ঞানসম্মত লোক তৈরি করা ছাড়া আমাদের কোন বিকল্প ব্যবস্থা নাই।

সাধারণত মধ্যবিত্ত ও উচ্চ শ্রেণির লোকেরা শিক্ষা-দিক্ষা,সভ্যতা-সংস্কৃতি ও আচার-আচরণে নিম্নে শ্রেণির চাইতে উন্নত। কিন্তু জন্ম নিয়ন্ত্রনের ফলে মধ্যবিত্ত ও উচ্চশ্রেণির লোক সংখ্যা কমছে। নিম্ন শ্রেণির লোকদের ভিতর জন্ম নিয়ন্ত্রন খুবই কম প্রচলিত। ফলে সমাজে নিম্নশ্রেণির লোক সংখ্যা বেড়েই চলছে। যেহেতু মধ্যবিত্ত ও উচ্চশ্রেণির লোক সংখ্যা কমে যাওয়ায় রাষ্ট্রক্ষমতার নেতৃত্ব চলে যাওয়ায় নিন্ম শ্রেণির হাতে। ফলে উন্নত জাতি গঠনে তাদের নিম্ন মানসিকতার কারণে সমাজে আজ এ দুরবস্তা।

Z_¨myÎ :

1.      Bmjv‡gi `„wó‡Z Rb¥wbqš¿Y, (XvKv : AvaywbK cÖKvkbx, 1992) 

2.     gyËvdvK¡ AvjvBn, wgkKvZ nv-3184

3.    gyËvdvK¡ AvjvBn, wgkKvZ nv-3186

4.      cwievi I cvwievwiK Rxeb, 

5.     wmjwmjv Qwnnv nv-575; Qwnûj Rv‡g, nv-4038

6.    cwievi I cvwievwiK Rxeb 

7.      cwievi I cvwievwiK Rxeb

8.     cwievi I cvwievwiK Rxeb

9.     Bmjv‡gi `„wó‡Z Rb¥wbqš¿Y

10.   Wv. Gm Gb cv‡Û, MvBwbDKjwR wkÿv, (†KvjKvZv, Avw`Z¨ cÖKvkbx-1977)

11.    Wv. Gm Gb cv‡Û, MvBwbDKjwR wkÿv

12.   Wv. Gm Gb cv‡Û, MvBwbDKjwR wkÿv

13.   hyw³i Kwó cv_‡i Rb¥wbqš¿Y

14.    hyw³i Kwó cv_‡i Rb¥wbqš¿Y

15.    Bmjv‡gi `„wó‡Z Rb¥wbqš¿Y

16.   åvwšÍi †eovRv‡j Bmjvg

17.     åvwšÍi †eovRv‡j Bmjvg

18.   Avj KziAvb, myiv Avbqvg, AvqvZ 151

19.    Avj KziAvb, myiv û`, AvqvZ 6

20.    Avj KziAvb, myiv Kvnvd, AvqvZ 46

21.   cwievi I cvwievwiK Rxeb

22.   Bmjv‡gi `„wó‡Z Rb¥wbqš¿Y

23.  Avj KziAvb, myiv AvbKveyZ, AvqvZ 60

24.   Avj KziAvb, myiv ïqviv, AvqvZ 12

25. Avj KziAvb, myiv Kvgvi, AvqvZ 49

26.  Avj KziAvb, myiv wn¾i, AvqvZ 21

27.  Avj KziAvb, myiv †gv‡gbyb, AvqvZ 17

28. hyw³i Kwó cv_‡i Rb¥wbqš¿Y

29. hyw³i Kwó cv_‡i Rb¥wbqš¿Y

30.  Avj KziAvb, myiv ewb BmivBj, AvqvZ 31

31.  Avj KziAvb, myiv wbmv, AvqvZ 119

32. cwievi I cvwievwiK Rxeb

33.  Bmjv‡gi `„wó‡Z Rb¥wbqš¿Y

34. Report of the Royal commission on population (1949)

35.  Avj KziAvb, myiv ewb BmivBj, AvqvZ 27

36.  Avj KziAvb, myiv Avivd, AvqvZ 31

37. Bmjv‡gi `„wó‡Z Rb¥wbqš¿Y

38.  Avj KziAvb, myiv Avivd, AvqvZ 172

39.  Avj KziAvb, myiv ewb BmivBj, AvqvZ 32

40.  Schwarz Oswald the Psychology of Sex (London : 1951)

41.  bvix 97, nv‡dR gvmD` Avng`; AvZ-ZvnixK (we‡k¦ wewfbœ ag© I mgv‡R bvix : GKwU mgxÿv) 6ó el©, 4_© msL¨v Rvbyqvix 2003) 

42.  gvwmK c„w_ex (cÖðv‡Z¨i †hŠb weK…wZ, RyjvB 2001

43. Rûix Le‡ii Lei, 1g LÛ

44.   gwiqg Rvwgjv-Bmjvg I AvaywbKZv

45.  Rûix-Le‡ii Lei, 1g LÛ

46. åvwšÍi †eovRv‡j Bmjvg

47.   Bmjvg I AvaywbKZv

48.  Bmjv‡gi `„wó‡Z Rb¥wbqš¿Y


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here