বাংলাদেশে আঞ্চলিক সড়ক ২২৪৭৬ কিলোমিটার এবং জাতীয় মহাসড়ক ২ লাখ ১৭ হাজার কিলোমিটার রয়েছে। এসব সড়কে চলাচল করে ৫৬ লাখ নিবন্ধিত মোটরযান। এছাড়াও লাখ লাখ অটোরিকশা, অটোভ্যান, নছিমন, করিমন, ভটভটি নানা রকম যানবাহন ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিরাপদভাবে চলাচল করে। এ ধরনের যানবাহন চালাচল অনিরাপদ তেমনিভাবে প্রশিক্ষণ বিহীন চালক, যাত্রী ও পথচারী নিরাপদে চলাচলের বিষয়ে অনভ্যস্ত ও অনভিজ্ঞ।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সড়ক দুর্ঘটনার বার্ষিক তথ্য প্রকাশ করেছে বিআরটিএ। তারা বলেছে, সড়কে গত বছর মৃত্যু হয়েছে ৫০২৪ জন, অন্যদিকে বাংলাদেশ পুলিশ বলছে ৪৪৭৫জন, রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে ৬৫২৪ জন এবং বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে ৭৯০২ জন। দুর্ঘটনা ৫,৪৯৫টি আহত ৭,৪৯৫ জন এবং প্রতিদিন গড়ে মৃত্যু ১৪ জন। সূত্র: বিআরটিএ
তবে, বিআরটিএ অভিযোগ করেছে যে, যাত্রী কল্যাণ সমিতি মৃত্যুর যে হিসাব দিয়েছে,সেটি 'অতিরঞ্জিত’। এ বিষয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বিআরটিএ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, বিআরটিএ তথ্য-উপাত্ত কম দেখিয়ে সরকারকে বিভ্রান্ত করছে। এতে সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।
উল্লেখ্য যে, রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী ২০২০ সালে মৃত্যুর সংখ্যা ৫৪৩১ জন, ২০২১ সালে মৃত্যুর সংখ্যা ৬২৮৪ জন এবং ২০২২ সালে মৃত্যুর সংখ্যা ৭৭১৩ জন। (সূত্র:দৈনিক প্রথম আলো, ২০২৪, বুধবার, ১৭ জানুয়ারি)
দুর্ঘটনার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে অদক্ষ চালক, মাদক, সড়কের অব্যবস্থাপনা এবং কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাব দায়ী। তাছাড়া চালকরা বেশিরভাগই অদক্ষ ও অপ্রশিক্ষিত। তারা সুযোগ পেলেই বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালায়। ফলে সড়কে দিনকে দিন মৃত্যুর হার বাড়ছে। চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা কমাতে হবে এবং তাদেরকে পরিস্থিতি বুঝে গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ দেয়া খুবই জরুরি। তাছাড়া মালিকদের অতি মুনাফার লোভ, চালকের স্বেচ্ছাচারিতা, সড়ক অব্যবস্থাপনা দক্ষ চালকের অভাব তো আছেই। অন্যদিকে দেশের মোটরসাইকেল চালকদের বড় অংশ কিশোর ও যুবক। তারা বেপরোয়াভাবে সাইকেল চালায়। ফলে নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হয় এবং অন্যদের ক্ষতি সাধন করছে।
এছাড়াও মাদকাসক্ত হয়ে গাড়ি চালানোর ফরে দুর্ঘটনা বাড়ছে। চালকদের বেশিরভাগই মাদকাসক্ত। এসবগুলোর মধ্যে প্রথম ও প্রধান যে কারণ হলো রাজনৈতিক কারণ। এখাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হলে সুস্থ্য ধারার রাজনীতি ফিরিয়ে আনতে হবে। এর পর যে জিনিসটি করতে হবে তাহলো আইনের যথাযথ প্রয়োগ। দুর্ঘটনার প্রতিরোধের ক্ষেত্রে আমরা বলতে চাই চালকদের নৈতিক শিক্ষা তথা ইসলামী শিক্ষা না থাকা। চাঁদাবাজির কারণে চালকদের ভিতরে একধরনের অস্থিরতা কাজ করে, তাই অনতিবিলম্বে চাঁদাবাজি বন্ধ করা। বেতন মুজরি ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত নাথাকায় হতাশা কাজ করে। সড়ক পরিবহন আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ করা। মহাসড়কে সাইনবোড, রোড মার্কিং অঙ্কন করা। যথাযথভাবে ট্রাফিক আইন মানতে বাধ্য করা এবং মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা ও নিয়মিত তদারকি করা।
আর কোন মায়ের বুক যেন খালি না হয় সড়ক দুর্ঘটনায় এই প্রত্যাশা আমাদের সকলের। আল্লাহ তুমি সকলকে নিরাপদে নির্বিঘ্নে চলাচল করার তাওফিক দান কর। আমিন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন