নারী : খ্রিষ্টান ধর্মে

বর্তমান পৃথিবীতে খ্রিষ্টানরা নিজেদেরকে সভ্যজাতি বলে দাবী করে। তারাই নাকি নারী জাতির আসল ত্রাণকর্তা। আসলে খ্রিষ্টান ধর্মে নারীকে পাপের প্রতীক বলে বিশ্বাস করে। তাদের মতে মানুষের আদি মাতা হাওয়া আ: এর ভুলের কারনে নারীর রকেথ পাপ স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সুতরাং মানব শরীরে মাতৃ রক্তের অংশ থাকে বলে সমস্ত মানব জাতিই পাপী। ধর্ম যাজক ইউহান্নার মতে, 'নারী ছলনামায়ী তার থেকে দূরে অবস্থান করা উচিৎ।' সপ্তদশ শতাব্দীতে কাউন্সিল অব দ্যা ওয়াইজ এক অধিবেশনে রোম নগরে অনুষ্ঠিত হয়। এই অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় Woman has no soul অর্থাৎ নারীর কোন আত্মা নেই।

ড: এসপ্রিঙ্গ Dr. Aspiring তার গ্রন্থে মধ্যযুগে নারী জাতির উপর জঘন্য নির্যাতনের বিশদ বর্ণনা করেছেন, ১৫০০ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ডের নারী জাতির বিচারের জন্য একটি পরিষদ গঠিত হয়। এটা নারীদের নিষ্ঠুরতা ও নির্যাতন চালানোর নতুন নতুন উপায় উদ্ভাবণ করে এই আইনের বলে খ্রিষ্টানগণ নব্বই লক্ষ জীবন্ত নারীকে অগ্নিতে দগ্ধ করে হত্যা করে। খ্রিষ্টান জগতের বিশিষ্ট্য ধর্মযাজক টারটুলিয়ানের মতে, নারী শয়তানের দোসর, ইবলিসের মুখপাত্র, নিষিদ্ধ বৃক্ষের প্রতি আহবানকারী, খোদাই বিধানের প্রথম লংঘনকারীণী এবং পুরুষ জাতির সর্বনাশকারীণী। 

অতীতের বহু বিখ্যাত পাদ্রী প্রকাশ্যে নারী জাতির উপর দোষারোপ করেছেন এবং নারীকে 'দরকারী আপদ' Necessary evil বলে অভিহিত করেছেন। আলেকজান্দ্রিয়ার ক্লিমেন্ট বলেন, নারী বলেই তার লজ্জায় অভিভূত হয়ে থাকা উচিৎ। খ্রিষ্টান জগতের মণীষী সেন্ট বার্নার্ড, সেন্ট এ্যাটনী, সেন্ট সিপ্লিন, সেন্ট গ্রেগরী, সেন্ট জিরাম প্রমূখ মণীষীগণ তারা নারী সম্পর্কে বলেন, নারী শয়তানের শক্তি, অজগর সাপের মত রক্ত পিপাসু সমস্ত নৈতিক ত্রুটির মূল উৎস, শয়তানের বাধ্যযন্ত্র, দংশানোন্মুখ বিষ্ণু এবং প্রকৃত পক্ষে আমাদের মনের উপর শয়তানের রাজ্য প্রতিষ্ঠায় নারী শয়তান সাহায্যকারীণী। খ্রিষ্টান জগতের শ্রেষ্ট আবতার ও রচয়িতা সেন্ট পল বিবাহকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পবিত্র ধর্মীয় বন্ধন বলে স্বীকার করে না। তিনি বলেন, He that give there not in marriage death better। অর্থাৎ 'যে ব্যক্তি তার কন্যাকে বিবাহ দেয় না সেই উত্তম কাজ করে। খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারীরা তালাক শব্দের সাথে পরিচিত নয়। তালাকের বিধান সম্পর্কে বলা CC, That the wife should not separate from her husband and that the husband should not divorce his wife। অর্থাৎ 'স্ত্রী তার স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হবে না আর স্বামীও তার স্ত্রীকে তালাক দিবে না।'

খ্রিষ্টান নেতৃস্থানীয় ধর্মযাজক নারীগণকে লক্ষ্য করে বলেছেন, 'তোমাদের আশা আকাংখা ও ইচ্ছা প্রবৃত্তি সব সময়ই পুরুষগণের অধিনে থাকবে এবং পুরুষগণই তোমাদের উপর প্রভৃত্ব করবে।' জননীকে লক্ষ্য করে বলেছেন, 'তুমি কে আমার কাছে তোমার প্রয়োজন কি? নারীর প্রতি হিটলারের নির্দেশ হল রান্না ঘরে যাও Go to the kitchen নারী সম্পর্কে ‘ফ্রান্সিস বেকেন’ বলেন, 'পুরুষের যৌবনকালে স্ত্রী প্রণয়িণী, প্রোঢ়ত্বে সঙ্গিণী আর বৃদ্ধাবস্থায় সেবিকা।' স্ত্রী চরমপন্থী স্ত্রীকে ঘৃনা কর। সাইরাস বলেন, 'স্ত্রী লোককে হয় ভালবাস না হয় ঘৃনা কর। সে কোন মধ্যপথ জানে না। নারী পরিত্যাজ্য নারীদের এড়িয়ে চল।' টলস্টয় বলেন, 'মেয়েদের সান্নিধ্য সমাজ জীবনের একটি প্রয়োজনীয় অপ্রীতিকর ব্যাপার যতটুকু সম্ভব এড়িয়ে চর।' খ্রিষ্টান পন্ডিত বায়রন বলেন, 'পুরুষ মানুষের সাথে এক টেবিলে বসে খাবার অধিকার মেয়েদের নেই। তাদের উপযুক্ত স্থান হচ্ছে ঘরের মধ্যে রান্না ঘর।' বহু খ্রিষ্টান ধর্ম নেতা বা সন্ন্যাসী তার গর্ভ ধারিণী মাকে পর্যন্ত স্পর্য করা থেকে বিরত থাকত। তাদের ধারণা নারীর স্পর্য ঘটলেই পুরুষের সমস্ত ইবাদত ধ্বংস হতে বাধ্য।

খ্রিষ্টানদের একজন পূণ্যবান নেতা 'গ্রেট পোলে’ বলেন, 'পুরুষ নারীর জন্য সৃষ্টি হয়নি বরং নারীই পুরুষের জন্য সৃষ্টি হয়েছে।' দার্শনিক সক্রেটিস বলেন, Woman is the greatest source of choose and disruption in the world. She is like the deafer tree which out worldly looks very beautiful But sparrows eat it they die without fail। অর্থাৎ 'নারী জগতে বিশৃংখলা ও ভাঙ্গনের সর্বশ্রেষ্ট উৎস, সে দাফালী বৃক্ষের ন্যায় যা বাহৃত খুব সুন্দর দেখায়, কিন্তু চড়ুই পাকি তা ভক্ষণ করলে তাদের মৃত্যু অনিবার্য। খ্রিষ্টীয় ৬ষ্ট শতাব্দীতে জেরুজালেমের পাদ্রীগণের এক ধর্ম কাউন্সিলে আলোচনা হয় যে প্রকৃতই নারী জাতির আত্মা আছে কি-না, এবং নারী মানব জাতির অন্তর্ভূক্ত কি-না। ইহাতে বহু সভ্যরায় দেন যে নারীর প্রাণ থাকিলেও আত্মা নেই। কাজেই সে মানুষ নয়। আবার কতক সভ্যরায় দেন যদিও নারী মানব সীমার বাইরে ফেলা যায় না তবুও সে সকল দোষের আঁধার।' জার্মানীর শ্রেষ্ট লেখক ‘নিটছ’ বলেন, 'যদি তোমরা সারা বিশ্বে ধ্বংস; ক্ষতি: বিপদ ও বিশৃঙ্খলা ডাকিয়া আনিতে চাও, তবে নারী জাতিকে স্বাধীন বা মুক্ত করিয় দাও।'