পারসিক ধর্ম নেতার নাম যরঘুষ্ট। তার বক্তব্য এবং ধর্মনীতিতে নারীদের ব্যাপারে লজ্জাস্কর ও ঘৃনিত বিষয় পরিলক্ষিত হয়। হযরত ঈসা আ: এর আগমনের প্রায় পঁচিশ বছর আগের যুগটি ছিল যরঘুষ্ট যুগ। তার মাজুসী ধর্মের মূল বৈশিষ্ট্য ছিল যৌন কেলেংকারী। কথিত আছে ইরানের অগ্নি পূজকদের ধর্মীয় নেতা হরোযোটি ইরানের মহা পরাক্রমশালী রা গষ্টাশিপের রাজত্বকালে যরোয়ার্টি (খ্রিষ্টপূর্ব ৬৬০-৫৮৩ ইরানের মনি শহরে) অনুগ্রহণ করেন। তার জন্য বৃত্তান্ত হ ইবরাহীম ও মুসা আ: এর জন্ম বৃত্তান্তের সহিত সামঞ্জস্যতাপূর্ণ বলিয়া কথিত হয়।
যরথুষ্ট নারী সম্পর্কে বলেন, যে নারীর সন্তান নেই, সে নারী পুলসিরাত পার হয়ে বেহেশেতে যেতে পারবে না। নারী যেন অন্য কারও সন্তান গর্ভে ধারণ বা পালন করে মাতৃত্ব লাভ করে। মাল্গুনী সম্রাট পারভেজ ভোগের জন্য বার হাজার নারী বিয়ে করেছিলেন। এ বার হাজার স্ত্রীর মধ্যে শতাধিক ছিল তার মা, বোন, খালা, ফুফু প্রমূখ নিকট আত্মীয় স্বজন। এ ধর্মের আরেক নেতা ময়ুকের' মতানুসারে ধন, সম্পদ ও নারী জাতীয় সম্পদ একা কেউ নারীকে ভোগ করতে পারবে না, ফলে তিনি বিয়ে প্রথা উঠিয়ে দেন।
পারসিক ধর্মে যুবতী নারী সম্পর্কে বলা হয়েছে কোন পুষ্পবর্তী নারী যেন সূর্য না দেখে। কোন পুরুষের সাথে কথোপকথন না করে, আগুনের দিকে না তাকায়। পানিতে না নামে, অন্য কোন পুষ্পিতা নারীর সাথে একত্রে শতন না করে, খাদ্য স্পর্য না করে, সে যেন শিশক পাত্রে খায়। কোন ঋতুবতী নারী যদি এর বিপরীত করে তাহলে তার জন্য বেহেশত ছাৱাম। নারী সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এন্ডারসকি Anderoskey বলেন, Cure is possible for fire burns and snake bite. But is impossible to arrest woman's charms। অর্থাৎ 'অগ্নিতে দক্ষমোগী ও সর্প দংশিত ব্যক্তির আরোগ্য লাভ সম্ভব, কিন্তু নারীর জাদু প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। পারস্য সম্রাট শাহ কাবাদ' মাজুসী ধর্ম গ্রহণ করার ফলে তিনি সাম্রাজ্যব্যাপী বিয়ে প্রথা উঠিয়ে দিলেন এবং এই নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের প্রসাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উঠিয়ে দিলেন। ফলে যে কোন লোক প্রসাদে প্রবেশ করে রাজ পরিবারের যে কোন নারীকে ভোগ করতে পারত। সম্রাট নিজেও যে কোন লোকের স্ত্রীকে ভোগ করতে পারত। এই হল পারসিক ধর্মে নারীর স্থান বা মর্যাদা।
বিভিন্ন ধর্মে নারীর স্থান সম্পর্কে আলোচনা করে দেখা গেল গোটা পৃথিবী ব্যাপী এই ছিল মায়ের জাতির অবস্থা। নারীকে মানব সমাজের মধ্যে গণ্যকরা হত না। ঘৃনা ও লাঞ্চনার অতল গহবরে নারীকে নিমজ্জিত করা হয়েছিল। আপাত দৃষ্টিতে তাকালে দেখা যায় সে সমাজে নারীর কোন মর্যাদা ছিল না, ছিল না কোন মৌলিক মানবাধিকার, ছিল না নারীর মান ইজ্জতের বালাই। কিন্তু আমরা যদি গভীরভাবে দৃষ্টি নিক্ষেপ করি তাহলে দেখতে পাব যে নারীর প্রতি ঐ সমস্ত বৈষম্যের কারণে শুধুমাত্র নারী জাতিরই ক্ষতি হয়নি বরং গোটা মানব সভ্যতারই ক্ষতি হয়েছে। কারণ নারীর প্রতি কুৎসিত মানসিকতার ধরুন সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। সমাজে নানা পাপাচারের সয়লাভ হয়েছে, তাতে সমাজ ও সভ্যতার বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছিলো।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন