মানুষ যা ভোগ করে বা উপভোগ করে, সবই তার রিজিক। রিজিক হালাল ইবাদত কবুলের শর্ত। রিজিক অর্জনের মাধ্যম হালাল বা বৈধ হতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে ওই রিজিক হালাল বা পবিত্র হবে না। সুরা মুমিনুন, ৫১নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا ۖ إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ হে রাসুলগণ! তোমরা আমার দেয়া হালাল রিজিক খাও এবং সৎকর্ম কর। অন্যদিকে সুরা বাকারার ১৭২ আয়াতে আল্লাহ বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِن طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ وَاشْكُرُوا لِلَّهِ إِن كُنتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ ‘হে মুমিনগণ! তোমরা হালাল ও উত্তম রিজিক আহার কর, যা আমি তোমাদের দিয়েছি।
একটি বিষয় লক্ষণীয় যে আপনি যে হালাল সম্পদ অর্জন করেছেন তা প্রতিবছর হিসাব করে জাকাত আদায়ের মাধ্যমে পবিত্র করতে হয়। সঠিকভাবে যাকাত আদায় না করলে সম্পদ হারাম হয়ে যায়।যেমনি ভাবে অজু বা গোসল ছাড়া নামাজ পড়া যায় না, তেমনি হালাল জিবিকা ছাড়া ইবাদত কবুল হয় না। হারাম জিনিস হালাল পন্থা অর্জন করলেও যেমন হালাল হয় না, তেমনিভাবে হালাল জিনিস হারাম পন্থায় অর্জন করলেও তা বৈধ হবে না।
জিবিকা হালাল পন্থায় অর্জন করা ফরজ। সকল মুসলিম পুরুষ ও নারীর জন্য উপার্জন হালাল হওয়া ফরজ। রাসুল সা: বলেছেন উপার্জন হালাল হওয়া একটি জিহাদ। (কানজুল উম্মাল )। জিবিকা বৈধভাবে সন্ধান করা ফরজ। রাসুল সা: বলেন, যে ব্যক্তি নিজ হাতে উপার্জন করে আহার করল সে পুলসিরাত পার হবে নিমিশে। (জামিউল আখবার)। তাছাড়া আল্লাহ তায়ালা তার প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন এবং তাকে কখনো শাস্তি দিবেন না। তার জন্য জান্নাতের দরজাগুলো খোলা থাকবে। (জামিউল আখবার)
যারা চাকরি করে, ব্যবসা করে। শ্রমিক তার কাজ ঠিক মত কাজ করা, মনিব তার কর্মচোরীকে ঠকালে বা ন্যায্য পাওনা না দিলে তার সম্পদ হালাল নয়। অন্যদিকে কর্মচারী তার মালিকের সাথে প্রতারণা করলে তার উপার্জন হালাল হবে না।
ব্যবসায়ী পণ্যে ভেজাল দিলে, ওজনে কম দিলে, নকল পণ্য বিক্রি করলে, মিথ্যা বা প্রতারণার আশ্রয় নিলে তাদের উপার্জন হালাল হবে না। আবার ক্রেতাও কোন প্রকার প্রতারণা করলে তার রিজিকও হালাল হবে না। এ বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা সুরা মুতাফফিফিন ১-২ আয়াতে বলেন, وَيْلٌ لِّلْمُطَفِّفِينَ-الَّذِينَ إِذَا اكْتَالُوا عَلَى النَّاسِ يَسْتَوْفُونَ-وَإِذَا كَالُوهُمْ أَو وَّزَنُوهُمْ يُخْسِرُونَ যারা মাপে কম করে, তাদের জন্যে দুর্ভোগ, যারা লোকের কাছ থেকে যখন মেপে নেয়, তখন পূর্ণ মাত্রায় নেয় এবং যখন লোকদেরকে মেপে দেয় কিংবা ওজন করে দেয়, তখন কম করে দেয়।
অযু ও গোসল ছাড়া যেমন নামাজ কবুল হয় না তেমনিভাবে রিজিক হালাল না হলে কোন ধরনের ইবাদত কবুল হয় না।
আল্লাহ আমাদেরকে বুঝার তাওফিক দান করুক। আমিন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন